ভারত ভাগের কথা

সমকাল বদরুদ্দীন উমর প্রকাশিত: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:০৪

ভারতের ইতিহাসের একটা বৈশিষ্ট্য এই যে, হাজার হাজার বছর ধরে বাইরে থেকে বিশাল আকারে বিভিন্ন জাতির লোক যেভাবে ভারতে প্রবেশ করেছে, এ রকম অন্য কোনো দেশে হয়নি। এই বিদেশিরা ভারত আক্রমণ ও লুটপাট করে নিজেদের দেশে ফিরে যায়নি। তারা এ দেশে এসে থেকে গিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম- গ্রিসের আলেকজান্ডার, গজনির সুলতান মাহমুদ এবং ইরানের নাদির শাহ্‌। কিন্তু সামান্য ব্যতিক্রম সত্ত্বেও বলা যায়, আক্রমণকারী এই বিদেশিরা এ দেশ লুটপাট করে ফিরে যাওয়ার জন্য ভারত আক্রমণ করেনি। মধ্য এশিয়া এবং অন্যান্য অঞ্চল থেকে তারা এখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য এসেছিল এবং বিপুল সংখ্যায় ভারতে থেকে গিয়েছিল। সুদূর প্রাচীনকালে যে আর্যরা ভারত আক্রমণ করে এ দেশে এসে বসবাস শুরু করেছিল, সেই বিদেশিরাই পরবর্তীকালে হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতা-সংস্কৃতির মূল নির্মাতা। আর্যদের বাদ দিয়ে হিন্দু ধর্ম ও সংস্কৃতি চিন্তাই করা যায় না। আর্যদের পর ধারাবাহিকভাবে শক, হুন থেকে নিয়ে আরব, ইরানি, তুর্কি, পাঠান, মোগল পর্যন্ত ভারতে এসেছে এবং এখানে থেকে গেছে।


উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা আবিস্কারের পর ইউরোপীয়রা সেসব দেশ দখল করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করলেও, তার সঙ্গে ভারতে বিদেশিদের বসবাস ছিল একেবারে অন্য রকম। ইউরোপীয়রা আমেরিকার আদিবাসীদের ব্যাপকভাবে হত্যা করে প্রায় নিশ্চিহ্ন ও একঘরে করেছিল। নতুন আমেরিকার শাসন ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তাদের কোনো অবস্থান থাকেনি। তা ছাড়া তাদের থেকে ইউরোপীয়দের সংস্কৃতি ছিল অনেক উচ্চ স্তরের। আর্যরা ভারতে এসে যে মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংস করেছিল, সেটি ছিল আর্যদের সভ্যতা থেকে অনেক উচ্চ স্তরের। আর্যরা ছিল পশুপালক ও যাযাবর। তাদের সংস্কৃতি ছিল মূলত পশুপালকদের সংস্কৃতি, যার সঙ্গে প্রাচীন ভারতের সংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটেছিল। যদিও তা ঘটতে সময় লেগেছিল। এমনভাবে এই সংমিশ্রণ ঘটেছিল, যাতে আর্য সভ্যতা পরিণত হয়েছিল ভারতীয় সভ্যতায়। বলতে গেলে, এখন প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতি বলতে যা বোঝায়, তার ভিত্তি নির্মিত হয়েছিল আর্যদের দ্বারা।


এক হিসাবে বলা চলে, আর্য সভ্যতা ও সংস্কৃতি আর্যপূর্ব ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে অনেকাংশে আত্মসাৎ করেছিল। ভারতের হিন্দু সংস্কৃতি বলতে যা বোঝায়, তা বিদেশি আর্যরাই নির্মাণ করেছিল।
আর্যদের পর শক, হুন, আরব, ইরানি, তুর্কি, পাঠান, মোগলরা ভারত আক্রমণ ও দখল করেছে এবং ভারতে থেকে গেছে। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, তারা এক দেহে লীন হয়েছে। এভাবে বহিরাগতরা ভারতে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকার সময় তারা ভারতীয় জনগণকে শত্রু মনে করে তাদের থেকে নিজেদেরকে একেবারে বিচ্ছিন্ন রাখার চেষ্টা করেনি। উপরন্তু নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে তারা ভারতীয়দের সঙ্গে যথাসাধ্য একাত্ম হতে চেষ্টা করেছে। তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি না করে ঐক্যের মধ্যেই নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং মঙ্গল দেখতে চেয়েছে।


আরব, তুর্কি, পাঠান, মোগলসহ যেসব জাতি ভারতে এসেছিল এবং এ দেশ শাসন করেছিল, তাদের সঙ্গে অবশ্য পূর্ববর্তী প্রবেশকারীদের একটি বড় পার্থক্য ছিল। ভারতে থেকে ভারতীয় হয়ে গেলেও তারা নিজেদের ধর্ম পরিত্যাগ করেনি তাদের পূর্ববর্তীদের মতো। তারা ছিল ইসলাম ধর্মের অনুসারী এবং এদিক দিয়ে তারা নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছিল। কিন্তু স্বাতন্ত্র্য বজায় থাকলেও ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম উভয়েই পরস্পর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে এই প্রভাব ছিল উল্লেখযোগ্য।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us