আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দক্ষ জনবল গড়তে হবে

দেশ রূপান্তর বদরুল হাসান প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:১১

প্রখ্যাত ইংরেজ রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ ডেভিড রিকার্ডো ১৮১৭ সালে প্রকাশিত তার On the Principles of Political Economy and Taxation গ্রন্থে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ভিত্তি ‘তুলনামূলক সুবিধা তত্ত্ব’ উপস্থাপন করেন। এই তত্ত্বের মূল কথা হলো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ প্রাকৃতিক, ভৌগোলিক, জনমিতিক, শিক্ষাগত, প্রযুক্তিগত, অবকাঠামোগত নানা তারতম্যের কারণে বিশেষ বিশেষ পণ্য উৎপাদনে বিশেষ পারঙ্গমতা অর্জন করে; অর্থাৎ একেক দেশ স্বল্প খরচে অন্যের তুলনায় সমমানের বা ভালো মানের পণ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। এখন যে দেশ যে পণ্য উৎপাদনে বেশি পারদর্শী, তারা যদি সেই পণ্য উৎপন্ন ও রপ্তানি করে এবং যেসব পণ্য উৎপাদনে অন্য দেশের তুলনায় তাদের খরচ বেশি হয়, সেগুলো উৎপাদনে পারদর্শী দেশগুলো থেকে আমদানি করে, তবে সবার জন্য জয়জয়কার অবস্থা (win-win situation) তৈরি হয়; মোটের ওপর গোটা বিশ্বের উৎপাদন বেড়ে যায়। মুক্তবাজারে আস্থাশীল অর্থনীতিবিদদের ধারণা এই যে, বাধাহীন বৈশ্বিক বাণিজ্যের মাধ্যমে এই ব্যবস্থার পরম বিকাশ ঘটানো সম্ভব, যার ফলে সবাই লাভবান হবেন।


বিশ্বব্যাপী অবাধ বাণিজ্য ত্বরান্বিত করার জন্য এখন গড়ে তোলা হয়েছে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা (World Trade Organization,WTO)। বিশ্ববাণিজ্য বাধাহীন করার প্রধান লক্ষ্য থাকলেও এ সংস্থা যত আইন-কানুন ও বিধিবিধান তৈরি করেছে, তাতে অবাধ বাণিজ্যই অনেক ক্ষেত্রে তার প্রধান শিকারে পরিণত হয়ে পড়েছে। এজন্য বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে শুধু মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদনই যথেষ্ট নয়, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার বিপুল ও জটিল আইন-কানুন, বিধিবিধান ও চুক্তি সম্পর্কে ধারণা ও জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। আরও প্রয়োজন এই জ্ঞান দক্ষতার সঙ্গে প্রয়োগের জন্য উপযুক্ত জনবল।


বাণিজ্যের বিশ্বায়ন নিয়ে নানা সমালোচনা থাকলেও এবং বিলম্বে হলেও বাংলাদেশ এই ব্যবস্থা থেকে সম্প্রতি বেশ ভালো সুফল অর্জন করতে সমর্থ হয়। দেশের রপ্তানি ক্রমেই বাড়ছে; macrotrends-এর তথ্য অনুযায়ী ২০০০ ও ২০১০ সালে দেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৬.৫৯ ও ১৮.৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরপর ২০২১-২২ সালে রপ্তানি আয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫২.০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (Dhaka Tribune, Dated 03, July, 2022)। ৫০ বিলিয়নের নিশানা অতিক্রম করলেও দেশের জিডিপির অনুপাতে এই রপ্তানি আয়ে আত্মতুষ্টির কোনো কারণ থাকতে পারে না; এখনো এটা জিডিপির ১০-১২ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে, এটাকে স্বল্প মেয়াদেই অন্তত ২৫ থেকে ৩০ শতাংশে উন্নীত করা প্রয়োজন। এর জন্য রপ্তানি পণ্য যেমন বহুমুখীকরণ করতে হবে, তেমনি রপ্তানির গন্তব্যও করতে হবে বিচিত্র ও নির্বিঘœ। পরিবহন খরচ ও সময় কম লাগায় নিকট প্রতিবেশীদের মধ্যে বাণিজ্যের প্রসার ঘটলে অবস্থার দ্রুত উন্নতি ঘটে থাকে। আসিয়ান (ASEAN) ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (EU) বাণিজ্য এর প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত।


বাংলাদেশ প্রায় তিন দিক দিয়ে ভারত দ্বারা পরিবেষ্টিত। ভারত যেমন বৃহৎ এক অর্থনীতি, তেমনি বিরাট এক বাজারও বটে। এর অর্থনীতিও ক্রমোন্নতিশীল। রাজনৈতিক পর্যায়ে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক যেকোনো বিচারে তুঙ্গে। কিন্তু বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এ সম্পর্কের প্রতিফলন দেখা যায় না। যেমন বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কাঁচামাল ও মূলধনসামগ্রী আমদানি করতে হয়। কিন্তু এই আমদানির প্রধান অংশীদার দোরগোড়ার ভারত নয়; দূরবর্তী চীন। ২০২০-২১ সালে ভারত থেকে আমদানি হয় ৮.৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, আর চীন থেকে আমদানি হয় ১২.৯ বিলিয়ন ডলারের সামগ্রী (Business Inspection, August 28, 2022)। তা ছাড়া, ভারতের সঙ্গে যে বাণিজ্য হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের বিপক্ষে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ বিপুল; ২০২১-২২ সালে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি ১৬ বিলিয়ন ডলার এবং সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি মাত্র ২ বিলিয়ন ডলার। দীর্ঘ মেয়াদে এই ভারসাম্যহীনতা দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়, কিন্তু এটা কমিয়ে আনার জন্য তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না। উল্টো ভারতীয় বাণিজ্য প্রশাসন এমন কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে, যাতে এ দেশের রপ্তানির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us