লিভারের অসুখের জন্য আমাদের নানা ভুল অভ্যাস অনেকাংশে দায়ী। বিশেষ করে ভুল খাবার নির্বাচন ও সঠিক উপায়ে না খাওয়া এর মধ্যে অন্যতম। বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, ঠিক সময়ে খাবার না খাওয়া, হাত না ধুুয়ে খাওয়ার মতো অভ্যাস থাকলে তা বাদ দিন। সেইসঙ্গে বাদ দিতে হবে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা, ঘুমে অনিয়ম করার মতো অভ্যাসও। কিছু খাবার আছে যেগুলো আপনার লিভার ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক তেমন ৭টি খাবার সম্পর্কে-
ওটস
যেসব খাবার ভালো হজমে সাহায্য করে তার মধ্যে অন্যতম হলো ওটস। ওটসে থাকে প্রচুর ফাইবার। যেসব খাবার হজম ভালো করে সেগুলো লিভারের জন্যও ভালো। এছাড়াও ওটসের থাকা বিটা গ্লুক্যানস লিভারকে প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। যাদের ডায়াবেটিস ও স্থুলতার মতো সমস্যা রয়েছে তারাও নিয়মিত ওটস খেতে পারেন। কারণ এই দুই অসুখের বিরুদ্ধেও লড়াই করে ওটস।
কফি
কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে অনেকেরই। পরিমিত কফি খেতে পারলে তা লিভারের সমস্যা থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে। সেক্ষেত্রে কফি খেতে হবে দুধ ও চিনি ছাড়া। ২০১৩ সালে আমেরিকায় একটি জরিপে দেখা যায় সেখানকার প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষে প্রতিদিন কালো কফি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। তাদের ভেতরে কারও লিভারের কোনো সমস্যা হয়নি। সেইসঙ্গে কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভার ক্যান্সারের সম্ভাবনাও কমিয়ে দেয়।
মাছ
ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত মাছ লিভারের জন্য উপকারী। এই ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের নানা রকম প্রদাহের থেকে দূরে রাখে। সেইসঙ্গে ঠিক রাখে উৎসেচকের ক্ষরণও। খাবারের তালিকায় স্যামন ফিশ রাখলে এক্ষেত্রে উপকার পাবেন। এছাড়াও রাখতে পারেন ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত অন্যান্য মাছও।
অলিভ অয়েল
খাবারের তালিকায় নিয়মিত অলিভ অয়েল রাখলে মিলবে অনেক উপকার। এই তেলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। সেইঙ্গে এটি বজায় রাখে লিভারের কার্যকারিতাও। অলিভ অয়েলে ক্ষতিকর ফ্যাট নেই। তাই প্রতিদিন পরিমিত অলিভ অয়েল খেলে তা আপনার লিভারকে সুস্থ রাখতে কাজ করবে।
ব্রকোলি
বিদেশি সবজি হলেও দেশি সবজির পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছে ব্রকোলি। সবুজ রঙের এই সবজি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে থাকে ভরপুর। এতে থাকে ক্যান্সার প্রতিরোধ করার মতো বিভিন্ন উপাদান। এই সবজি নিয়মিত খেলে লিভার সুস্থ থাকে। সেদ্ধ ব্রকোলি বা এর স্যুপ খেলে উপকার পাবেন।
বাদাম
ক্ষুধা পেলে একমুঠো বাদাম খাওয়ার অভ্যাস থাকে অনেকেরই। তাই বলে মুঠো মুঠো খাবেন না যেন। কারণ কোনো খাবারই অতিরিক্ত খেলে তা আর উপকারী থাকে না। সব ধরনের বাদামই অল্প করে খেতে পারেন প্রতিদিন। এতে শরীরে অনেক ধরনের উপকার মিলবে। কারণ এতে থাকে ভিটামিন ই, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ইত্যাদি। এসব উপাদান লিভার ভালো রাখতে কাজ করে।
গ্রিন টি
প্রতিদিন এক কাপ গ্রিন টি পান করতে পারেন। কারণ এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে। সেইসঙ্গে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ দূর করতেও সাহায্য করে। ফলে ভালো থাকে আমাদের লিভার। উপকারী বলে খুব বেশি খাবেন না, দিনে এক কাপ পান করাই যথেষ্ট।