ব্যাংকসহ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের ঋণ বেড়েই চলেছে। শুধু গত পাঁচ বছরেই এ খাত থেকে ঋণ বেড়েছে প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে ঋণ বেড়েছে ১২৪ শতাংশ। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষেও অভ্যন্তরীণ খাত থেকে সরকারের মোট ঋণ ছিল ৩ লাখ ২০ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। ২০২২ সাল শেষে তা ৭ লাখ ১৭ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত, সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে জনগণের কাছ থেকে এ ঋণ নিয়েছে সরকার।
সরকার প্রতি বছরই বিপুল অংকের ঘাটতি রেখে বাজেট ঘোষণা করছে। চলতি অর্থবছরেও ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট ঘাটতি দেখানো হয়েছে, যা মোট বাজেটের ৩৬ শতাংশ। রেকর্ড এ বাজেট ঘাটতি পূরণ করতেই দেশী-বিদেশী উৎস থেকে ঋণ বাড়ছে। চলতি অর্থবছরেও সরকার দেশের ব্যাংক খাত থেকে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। তবে এ পরিমাণ ঋণ দেয়ার সক্ষমতা নেই দেশের ব্যাংক খাতের। তাই ব্যাংকগুলোর কাছে ট্রেজারি বিল-বন্ড বিক্রি না করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেই এ ঋণের জোগান দিয়ে যাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের নেয়া ঋণের পরিমাণ বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। গত পাঁচ বছরেই এ ঋণ বেড়েছে ৯২৭ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৭ সাল শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারকে দেয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা। ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে তা ১ লাখ ২১ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এ হিসাবে পাঁচ বছরের ব্যবধানে ৯২৭ শতাংশ বেড়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ২০১৭ সালে সরকারের নেয়া ঋণের স্থিতি ছিল ৭০ হাজার ৭ কোটি টাকা। গত বছর শেষে এ ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৮০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। সে হিসাবে পাঁচ বছরে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ বেড়েছে ১৫৮ শতাংশ। আর সঞ্চয়পত্র বিক্রিসহ অন্যান্য খাত থেকে এ সময়ে নেয়া ঋণ ৭৪ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৭ সালের নভেম্বরে এ উৎসগুলো থেকে সরকারের নেয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। গত বছরের নভেম্বরে জনগণের কাছ থেকে সরাসরি নেয়া ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ১৪ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাবদ ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা।