নতুন করে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির যে প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে রড উৎপাদনে টনপ্রতি খরচ ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি বাড়বে। বাড়তি এ উৎপাদন খরচ শেষ পর্যন্ত যুক্ত হবে পণ্যের দামে। আমাদের প্রাথমিক যে হিসাব, তাতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ফলে গ্রাহকপর্যায়ে প্রতি টন রডের দাম ১ হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে কোম্পানির সক্ষমতাভেদে এ খরচ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
রডের দাম বাড়লে অবশ্যই সব ধরনের অবকাঠামো বা নির্মাণ খাতের ব্যয়ও বাড়বে। বিশেষ করে সরকারের চলমান বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পের খরচও অনেক বেড়ে যাবে। তবে এ কথাও সত্য, দেশের বর্তমান বাস্তবতায় ভর্তুকি কমাতে হলে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা ছাড়া সরকারের সামনে আর কোনো বিকল্পও নেই। তাই বাধ্য হয়ে সরকার দাম বাড়ানোর এ ঘোষণা দিয়েছে। তবে একসঙ্গে এত দাম না বাড়িয়ে ধাপে ধাপে বাড়ালে তাতে হয়তো সবার মানিয়ে নেওয়া সহজ হতো।
তবে আমি এ কথা বলতে পারি, গ্যাসের দামের কারণে রডের দাম বাড়ানো হলে তারপরও এ দেশে রডের দাম আশপাশের অনেক দেশের তুলনায় কমই থাকবে। বর্তমানে পাকিস্তানে প্রতি টন রডের দাম ২ লাখ ৩৮ হাজার রুপি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা। সেই হিসাবে আমাদের দেশে এখনো রডের দাম সস্তায় আছে বলা যায়।
এ মুহূর্তে এই শিল্পে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির চেয়ে বড় সমস্যা ডলার–সংকটে কাঁচামাল আমদানির ঋণপত্র খুলতে না পারা। কাঁচামাল আমদানির সংকটের কারণে দেশেও স্ক্র্যাপের দাম বাড়তে শুরু করেছে। আমদানি স্বাভাবিক না হলে এ খাতে সংকট আরও বাড়বে। আমি মনে করি, কাঁচামাল আমদানি স্বাভাবিক থাকলে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির এ চাপ আমরা মোকাবিলা করতে পারব। তাই সরকারের কাছে আমাদের চাওয়া, আমদানি ঋণপত্র খোলার জটিলতার দ্রুত সমাধান। অন্যথায় এ শিল্পে সংকট প্রকট হবে।