প্রযুক্তির আশীর্বাদ জাদুর বাক্সের মতো প্রতিদিন উপহার দিচ্ছে চমক। মানুষের জয়যাত্রা ছড়িয়ে গেছে পরমাণু থেকে ছায়াপথে। তবে ভিন্ন নজির স্থাপন করলেন তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। সম্প্রতি তারা ঘ্রাণ শনাক্ত করতে সক্ষম, এমন রোবট আবিষ্কার করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন।
নিউরোসায়েন্স নিউজের প্রতিবেদনে রোবটটিকে বায়ো-হাইব্রিড বলা হয়েছে। বায়ো-হাইব্রিড রোবট বলতে এমন ধরনের রোবটকে বোঝানো হয়, যা তৈরিতে জীবকোষ বা কোনো অঙ্গের মতো জীব উপাদান ব্যবহার করা হয়। এটা মূলত বায়োলজি ও রোবটিকসের সমাবেশ। সাধারণ রোবটের চেয়ে গঠনের দিক থেকে ভিন্ন হওয়ার কারণে বায়ো-হাইব্রিডের কার্যাবলিও ভিন্ন। বলতে গেলে মানুষ ও অন্য জীবন্ত প্রাণীর মতোই বিস্তৃত। নতুন এ গবেষণায় রোবটের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে মরুভূমিতে বসবাসকারী পতঙ্গের অ্যান্টেনা। অ্যান্টেনা দুটি বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার মাধ্যমে সংযুক্ত। অ্যান্টেনায় কোনো ঘ্রাণ শনাক্ত হলে বিশেষ ধরনের বৈদ্যুতিক সংকেত চলে আসে রোবটে। তখন রোবটে যুক্ত অ্যালগরিদমের মাধ্যমে সংকেতগুলো ভিন্ন ভিন্ন আউটপুট আকারে হাজির হয়। ফলে আলাদা ঘ্রাণের জন্য আউটপুট হয় আলাদা। বর্তমানে আট প্রকার ঘ্রাণকে আলাদাভাবে শনাক্ত করতে পারে রোবটটি। নিকটভবিষ্যতে পরিধি আরো বিস্তৃত হবে। রোবটটি ব্যবহার করা যাবে ড্রাগ ও বিস্ফোরক শনাক্তকরণে।
পতঙ্গকে আগেও নানাভাবে ব্যবহার করা হয়েছে বৈজ্ঞানিক গবেষণায়। ২০২২ সালের জুনে মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষণাপত্রে ক্যান্সার কোষ শনাক্তকরণে পতঙ্গের ব্যবহার নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। পতঙ্গ নিয়ে আগ্রহ বিবর্তন এনেছে রোবটের ধারণায়ও। দিন দিন রোবট মানুষের সদৃশ হিসেবে হাজির হচ্ছে মানবসমাজে। এতদিন রোবটের দেখা ও শোনাবিষয়ক খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। অবশ্য ঘ্রাণের খবর এটিই প্রথম। মানুষের সব ইন্দ্রিয়র মতো ক্ষমতা লাভ করলে রোবটকে নিজের পরিবেশ বাছাই এবং মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে নতুনভাবে ব্যবহার করা যাবে।