দেশে করোনার থাবা পড়ার আগে চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে প্রতিদিন যাত্রী পরিবহন করত জালালাবাদ এক্সপ্রেস। মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা ও ফেনীর ওপর দিয়ে চলাচল করা এই এক্সপ্রেস ট্রেনটি ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সাময়িক বন্ধের কথা বলা হলেও পরে আর ট্রেনটি চালু করেনি কর্তৃপক্ষ। এতে বিপাকে পড়েন স্বল্প খরচে ট্রেনটিতে যাতায়াত করা শত শত যাত্রী।
শুধু জালালাবাদ এক্সপ্রেস নয়, ২০২০ সালে প্রথম লকডাউন (কঠোর বিধিনিষেধ) ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে একে একে ৫৬টি মেইল, এক্সপ্রেস ও কমিউটার ট্রেন বন্ধ করে দেয় পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে। পরবর্তী সময়ে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও বন্ধ হওয়া এসব ট্রেন আর চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এতে রেলওয়ে যেমন প্রতিবছর অন্তত ৩৬ কোটি টাকা আয়বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষতির মুখে পড়েছেন এসব ট্রেনের নিয়মিত যাত্রীরা।
জালালাবাদ ট্রেনে নিয়মিত চড়তেন চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন। চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে ওঠার সময় কিছু পান ও শুঁটকি সঙ্গে নিতেন তিনি। এসব পান ও শুঁটকি মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বিক্রি করে যেটুকু লাভ হতো, তা দিয়েই সংসার চলত তাঁর। কিন্তু জালালাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পণ্য পরিবহনে খরচও বেড়ে যায় তাঁর। জসিম উদ্দিন জানান, তাঁর মতো অনেকেই এভাবে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ব্যবসা করতেন। মেইল ও এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কেউ কেউ খরচ মেটাতে না পারায় ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বন্ধ থাকা ৫৬টি ট্রেনের মধ্যে ২৪টি ডেমু ট্রেন, বাকিগুলো মেইল ও লোকাল ট্রেন। নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তরা কম টাকায় গন্তব্যে যাওয়া-আসা করতে নিয়মিত এসব ট্রেনের চড়ত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ট্রেন হলো চট্টগ্রাম-সিলেট রুটের জালালাবাদ এক্সপ্রেস, ঢাকা-নোয়াখালী রুটের নোয়াখালী কমিউটার, আখাউড়া-সিলেট রুটের কুশিয়ারা এক্সপ্রেস, ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের ঈশা খান এক্সপ্রেস, ঢাকা-গাজীপুর হাইটেক সিটি রুটের কালিয়াকৈর কমিউটার-১ ও ২, ময়মনসিংহ-দেওয়ানগঞ্জ রুটের লোকাল ট্রেন, ময়মনসিংহ-ভৈরববাজার রুটের লোকাল ট্রেন ও সিলেট-ছাতক বাজার-সিলেট রুটের লোকাল ট্রেন।