শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায়। ফলে বায়ুমণ্ডল ত্বক থেকে পানি শুষে নেয়। এতে করে ত্বক, ঠোঁট ও পায়ের তালু ফাটতে থাকে। মানবদেহের ৫৫ শতাংশই হলো পানি। এর মধ্যে ত্বক নিজেই ধারণ করে ১০ ভাগ। ত্বক থেকে পানি বেরিয়ে গেলে ত্বক নির্জীব হয়ে পড়ে। আমাদের ত্বকে থাকে ঘর্ম ও তেলগ্রন্থি, যেখান থেকে অনবরত তেল ও ঘাম বের হয়। এই ঘাম ও তেল মিলে একধরনের আবরণী তৈরি করে, যা ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে। শীতে ত্বকের গ্রন্থি থেকে ঘাম বা তেল কোনোটাই বেশি তৈরি হতে পারে না। তাই এই সময় নিতে হবে বিশেষ যত্ন।
- শীতকালে কমবেশি সবার ঠোঁট ফাটে। লিপজেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করে ঠোঁট ভালো রাখা যায়। জিব দিয়ে ঠোঁট ভেজানো উচিত নয়। এতে ঠোঁট ফাটা আরও বেড়ে যেতে পারে।
- নখেরও যত্ন নিতে হবে। শীতকালে ফাঙ্গাস দেখা দিতে পারে। ভিটামিন, মিনারেলের অভাবে অনেক সময় নখ ফেটে যায় ও সাদা হয়ে যায়।
- শীতকালে পা ফাটলে এক্রোফ্লেভিন দ্রবণে পা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর পা পানি থেকে তুলে শুকিয়ে পেট্রোলিয়াম জেলি মাখুন। গ্লিসারিন ও পানির দ্রবণ পায়ে মাখিয়ে ফাটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। পা ফাটা কম হলে অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়। বাজারে অনেক রকম ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায়। যেমন পেট্রোলিয়াম, ভেজিটেবল অয়েল, ল্যানোলিন, সিলিকন, লিকুইড, প্যারাফিন, গ্লিসারিন ইত্যাদি।
- ইকথায়োসিস একটি জন্মগত রোগ। রোগটি শিশুকাল থেকেই লক্ষ করা যায়। নারী-পুরুষ উভয়েরই এ রোগ হতে পারে। এতে আক্রান্ত হলে হাত ও পায়ের ত্বক ফাটা ফাটা এবং ছোট ছোট গুঁড়ি গুঁড়ি মরা চামড়া বা আঁশ পায়ের সামনের অংশে বা হাতের চামড়ায় দেখা যায়। তবে হাত ও পায়ের ভাঁজযুক্ত স্থান সম্পূর্ণ স্বাভাবিক থাকে। শীত এলেই এর তীব্রতা বাড়ে। একই সঙ্গে থাকে অ্যালার্জি। শীত এলে বেশি বেশি তৈলাক্ত পদার্থ মাখলে ত্বক ভালো থাকে ও ফাটা ভাব থাকে না। তবে যাদের ফাটা অবস্থা বেশি, তাদের ক্ষেত্রে আলফা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড মাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়। অথবা গ্লিসারিনের সঙ্গে সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে ত্বকে মাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়।