পার্লামেন্ট না সুপ্রিম কোর্ট, কে সর্বোচ্চ—সেই কাজিয়ায় ঢুকে পড়েছে ভারতীয় সংবিধান। হুমকির মুখে সংবিধানের মূল কাঠামো। সংসদকে যাঁরা ‘সুপ্রিম’ মনে করেন, তাঁদের দাবি, সংসদের ইচ্ছানুযায়ী সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা থাকা উচিত। প্রয়োজনে মূল কাঠামোরও। কারণ, গণতন্ত্রে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই শেষ কথা।
কারা ভাবছে এই কথা? শাসক দল বিজেপি। উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে দিয়ে শাসক দল এ বিতর্কের সূত্রপাত ঘটাল মনে করা অমূলক নয়। পশ্চিমবঙ্গের এই সাবেক রাজ্যপাল শুধু রাজনীতিকই নন, আইনবিশারদও। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ছিলেন তিনি। অতএব সংবিধানবিশেষজ্ঞও। উপরাষ্ট্রপতি পদে তিনিই ছিলেন বিজেপি মনোনীত প্রার্থী।
যখন তিনি প্রকাশ্যে বলেন পার্লামেন্টই সর্বোচ্চ, ইচ্ছেমতো সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা তার রয়েছে এবং কেশবানন্দ ভারতী মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় ‘খারাপ নজির’, বিজেপির কেউ তখন প্রতিবাদ করেননি। কেউ বলেননি, উপরাষ্ট্রপতির মন্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত। অতএব তাঁর মন্তব্যের সঙ্গে বিজেপি ও সরকার সহমত—এমন ভাবা অসংগত নয়। এ দেশে সাংবিধানিক পদের অধিকারী কেউ আজ পর্যন্ত সংবিধানকে ছাপিয়ে পার্লামেন্টকে উচ্চাসনে বসাননি। জগদীপ ধনখড় তা করে তুলে দিলেন দেশজোড়া বিতর্ক।