বাসায় শিশু অনেক কথা বলে, কিন্তু স্কুলের মঞ্চে উঠে কবিতা বলতে গেলেই বাধে বিপত্তি। একরাশ জড়তা যেন গ্রাস করে বসে তাকে। কেন এমন হয়?
এসব ক্ষেত্রে ছোটদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা কাজ করে। অন্যেরা আমাকে দেখলো, কে কী ভাবলো- এগুলো মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে। সাত-আট বছর বয়সী থেকে শুরু করে টিনএজারদের মধ্যে এই সংশয় বা দ্বিধা বেশি দেখা যায়। কারও ক্ষেত্রে হয়তো একটু প্রশংসা বা উৎসাহ তার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কাজে দেয়। কারও ক্ষেত্রে হয়তো কাউন্সেলিং প্রয়োজন হয়। তবে সমাধান না খুঁজে তাকে বকাঝকা করাটা একেবারেই অনুচিত। এতে শিশুর আত্মবিশ্বাস একেবারে ভেঙে যাবে।
আত্নবিশ্বাসের অভাব কিংবা সবার সামনে জড়তা কাজ করা এক ধরনের ভীতি, যা ধীরে ধীরে কাটাতে হবে।
আমরা অনেক সময় শিশুদের সঙ্গে তার বন্ধুদের তুলনা করে ফেলি। বা ছোটদের বলি ‘এই রকম করলে লোকে কী বলবে!’ এতে ওরা নিজেদের অজান্তেই মনের মধ্যে একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে নেয়। অনেক সময় দেখা যায় বাড়িতে শিশু সব পড়াশোনা পারছে, কিন্তু স্কুলে গিয়ে আর পারছে না। পরীক্ষার খাতায় হয়তো লিখে আসছে, কিন্তু মৌখিক পরীক্ষার সময়ে সব যেন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে স্কুলের শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলুন। অন্য সময়ে ক্লাসে সন্তানের আচরণ কেমন থাকে, সেটা জানার চেষ্টা করুন। বাড়িতে নিজেই মৌখিক পরীক্ষা নিন। তবে বকাঝকা কিংবা মারধর করবেন না কোনোভাবেই। এতে শিশু আরও গুটিয়ে নেবে নিজেকে।
ভুলে যাওয়া কিংবা না পারা কোনও দোষ নয়। এগুলো সাময়িক ব্যাপার, যা অধ্যবসায় এবং ধৈর্য্যের মাধ্যমে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। বাড়িতে যখন আপনার সামনে সে গাইবে-নাচবে রেকর্ড করে রাখুন। ওকে দেখান সে আসলে কতটা ভালো করেছে বা কোন জায়গাগুলো আরও ভালো করা যায়। সন্তানক উৎসাহ দিতে হবে সবসময়।