পুরুষের মুখে দাড়ি গজানোর এবং নারীর মুখে দাড়ি না থাকার প্রধান কারণ এক ধরনের যৌন হরমোন অ্যান্ড্রোজেন।
মানুষের শরীরের রোমকূপের বৈশিষ্ট্য মোটেই সরল নয়। অ্যান্ড্রোজেন যেমন চুল ওঠার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে, তেমনি আবার চুল পড়ার কারণও হয়।
অনেক সময় অস্বাভাবিক স্থানে এই হরমোনের প্রভাবে চুল গজায়। যেমন: কানের ভেতরে।
রোমকূপের এমন ভিন্ন আচরণের কারণ যে কী, সেই উত্তরটা জটিল। যুক্তরাজ্যের অ্যাঞ্জিলা রাসকিন ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং প্রফেসর ও সেইন্ট অ্যান্ড্রুস সেন্টার ফর প্লাস্টিক সার্জারি অ্যান্ড বার্নসের সার্জন বেন মিরান্ডা বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, 'বাস্তবতা হচ্ছে, গবেষকদের পক্ষে এই প্রশ্নের চূড়ান্ত উত্তর দেওয়াটা সহজ নয়। মানুষের সবগুলো রোমকূপ একই রকম না। এগুলো শরীরের বিভিন্ন স্থান অনুসারে ভিন্ন।'
বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত মানুষের শরীরের রোমকূপ থেকে ছোট, পাতলা ও হালকা লোম বের হয়, যেমনটা আমরা সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের হাতের পেছনের দিকটায় দেখতে পাই। এটাকে বলা যেতে পারে চুলের প্রাথমিক ধাপ।
বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানোর পর ছেলে ও মেয়েদের শরীরে প্রচুর অ্যান্ডোজেন তৈরি হয়, যার নাম টেস্টোস্টেরন। ছেলেদের শরীরে বেশি অ্যান্ড্রোজেন তৈরি হয়। এর প্রভাবে রোমকূপ থেকে গাঢ়, ঘন ও লম্বা চুল উঠতে থাকে। এই চুলকে বলা হয় মধ্যবর্তী পর্যায়ের চুল বা ইন্টারমিডিয়েট হেয়ার।
ছেলেদের ঠোঁটের উপরে এ সময় হালকা গোঁফের রেখা দৃশ্যমান হয়। সময়ের সঙ্গে এই অ্যন্ড্রোজেনের প্রভাবেই চুলগুলো আরও গাঢ় ও ঘন হতে থাকে। গাঢ় ও ঘন হতে হতে যখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়ে, তখন এই চুলকে বলা হয় চূড়ান্ত ধাপের চুল বা টার্মিনাল হেয়ার।
বয়ঃসন্ধিকালে নারীর শরীরেও চুলের পরিবর্তন হয়। তবে সেটা পুরুষের মতো এত নাটকীয়ভাবে না। এ সময় নারীর চেহারার লোমগুলো প্রাথমিক থেকে মধ্যবর্তী ধাপে উপনীত হয় এবং তাদের বগল ও যৌনাঙ্গের আশেপাশের চুল মধ্যবর্তী থেকে চূড়ান্ত ধাপে উন্নীত হয়।