প্রযুক্তির ছোঁয়া এখন আর শুধু উন্নত দেশগুলোতে সীমাবদ্ধ নেই। তুলনামূলকভাবে কম উন্নত দেশগুলোতেও উন্নয়নের মাত্রায় যোগ করেছে ভিন্নতা। প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের জীবনকে সহজ করে দেয় ঠিকই, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, প্রযুক্তির ব্যবহারে দিন দিন কমে যাচ্ছে কর্মসংস্থান।
বইয়ের কথাই ধরা যাক। বই পড়ার প্রয়োজনীয়তা ছিল, আছে এবং থাকবে। কিন্তু দিন দিন বই পড়ার জন্য আমাজন কিন্ডল, ট্যাবলেট বা ইলেক্ট্রনিক বুক রিডার চাহিদা বেড়েই চলেছে। গড়ে উঠছে গুগল বুকস-এর মতো অনলাইন লাইব্রেরি। এসব লাইব্রেরিতে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা যে কোনো বই পড়া যায় ইচ্ছামতো। ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ইন্টারনেট-ভিত্তিক লাইব্রেরি গড়ে তোলার কাজ শুরু করে দিয়েছে। বড় বড় প্রকাশনীও তাদের মুদ্রিত বইগুলোকে ডিজিটাল ফরম্যাটে রূপান্তরের কাজ শুরু করে দিয়েছে। ফলে প্রথাগত প্রকাশনা ও লাইব্রেরিগুলো খুব দ্রুত আবেদন হারাচ্ছে। এটা অনুমেয় যে, লাইব্রেরিয়ানের কাজটি একসময় নিতান্তই বিরল হয়ে যাবে।
যেকোনো খেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য দায়িত্বে একজন নিয়োজিত থাকেন। যেমন, ফুটবলে রেফারি আর ক্রিকেটে আম্পায়ার। বর্তমানে ভিডিও প্রযুক্তির উন্নতির ফলে ফুটবলে ও ক্রিকেটে অনেক সিদ্ধান্তই রিভিউ করা হয় প্রযুক্তির মাধ্যমে। তাই সে সময় আর খুব বেশি দেরি নেই, যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক খেলার সব সিদ্ধান্তই প্রযুক্তির সাহায্যে নেওয়া হবে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ফিউচার অব জব সার্ভে ২০২০ অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রায় সাড়ে আট কোটি চাকরি গায়েব হয়ে যাবে। তবে, নতুনভাবে উদ্ভব হবে আরও সাড়ে নয় কোটি চাকরির। যেসব চাকরির চাহিদা বাড়বে, তার প্রথম দিকে রয়েছে ডেটা বিশ্লেষক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিং বিশেষজ্ঞ, বিগ ডেটা বিশেষজ্ঞ, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং কৌশল বিশেষজ্ঞ, প্রসেস অটোমেশন বিশেষজ্ঞ। আর যে চাকরির চাহিদা কমবে, সে তালিকার প্রথম পাঁচটি হলো ডেটা এন্ট্রি ক্লার্ক, প্রশাসনিক ও নির্বাহী সচিব, অ্যাকাউন্টিং, বুককিপিং এবং পে’রোল ক্লার্ক, হিসাবরক্ষক এবং নিরীক্ষক, উৎপাদন কারখানার শ্রমিক।