মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ২৪ দিন পর পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরেছিলেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের স্বাধীনতার মতোই তাৎপর্যপূর্ণ একটি ঘটনা। তিনি যদি ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে না আসতেন আর পাকিস্তানি সামরিক জান্তারা তাঁকে হত্যা করত, তাহলে আমরা আজকের এই বাংলাদেশ পেতাম কি না, সন্দেহ আছে। বঙ্গবন্ধুর সমালোচকদের কেউ কেউ এখনো বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি শাসকদের গ্রেপ্তারের সুযোগ না দিয়ে আত্মগোপন করতে পারতেন। আত্মগোপনে থেকে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিতে পারতেন। যাঁরা এ ধরনের কথা বলেন, তাঁরা আসলে সেই সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা সম্পর্কে জানেন না।
প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো, বঙ্গবন্ধু রাজনীতি করেছেন সিংহ ও বীরের মতো। তিনি লুকোচুরি পছন্দ করতেন না। তিনি তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘আমি পালিয়ে থাকার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। কারণ আমি গোপন রাজনীতি পছন্দ করি না, আর বিশ্বাসও করি না (পৃ. ১৩৪)।’ ব্রিটিশ ধাঁচের সংসদীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ছিল বঙ্গবন্ধুর পছন্দ।