সারারাত ধরে অধীর প্রতীক্ষা। রাস্তায় রাস্তায় মানুষের জয়ধ্বনি। শীতল রাত্রির নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁকা গুলির আওয়াজ। পাড়ায় মহল্লায়, গ্রামে গঞ্জে, হাটে বাজারে সর্বত্রই উৎসবের ঢেউ। অবশেষে ঘরের ছেলে ফিরছে ঘরে।
সকাল হতেই পুরো ঢাকা শহরের মানুষের যেন একটিই গন্তব্য, একটিই ঠিকানা। সব জনস্রোত মিলেছে একটি রেখায়। তেজগাঁও বিমানবন্দর জনতার মহাসমুদ্র। ক্ষণে ক্ষণে 'জয় বাংলা' স্লোগান যেন মহাসমুদ্রের ঢেউ।
অপেক্ষা আর ফুরোতেই চায় না। অবশেষে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ!
দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে ব্রিটিশ রয়েল এয়ারফোর্সের কমেট বিমানটি ছুঁলো স্বাধীন বাংলার মাটি। বহু আরাধ্যের বিজয় পূর্ণতা পেল অবশেষে। যে মহানায়কের ডাকে ঘোষিত হয়েছিল স্বাধীনতা, কোটি জনতা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে, বিজয়ের ২৩ দিন পর সেই স্বদেশের মাটিতে পা রাখলেন মহাবীর। লাখো জনতা অবিস্মরণীয়ভাবে বরণ করে নিল স্বাধীনতার মহানায়ককে।
বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী বিমান রানওয়ে ছোঁয়ামাত্রই ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বরণ করে নেয়া হলো বঙ্গবন্ধুকে। দেয়া হলো গার্ড অব অনার। আবেগে আপ্লুত বঙ্গবন্ধুর সমস্ত আবেগ ভেঙ্গে চোখ ভিজে আসছিল। লাখো জনতার জনস্রোত ডিঙ্গিয়ে বঙ্গবন্ধু ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের বহনকারী খোলা ট্রাকের তেজগাঁও বিমান বন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান অব্দি পৌঁছাতে সময় লাগল ২ ঘণ্টারও বেশি।