এখন থেকে অর্থঋণ আদালতে মামলা ছাড়াই পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অবলোপন করা যাবে। ঋণের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে মামলা খরচ বেশি হয়। এ বিবেচনায় ব্যাংকগুলোর ছোট ঋণ অবলোপনে এমন সুযোগ দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতদিন মামলা ছাড়াই দুই লাখ টাকা পর্যন্ত খেলাপি ঋণ অবলোপনের সুযোগ ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার খেলাপি ঋণ অবলোপনের নতুন এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বছরের পর বছর ব্যাংক ব্যবস্থায় থাকা মন্দ মানে শ্রেণীকৃত খেলাপি ঋণ স্থিতিপত্র (ব্যালান্সশিট) থেকে বাদ দেওয়াকে ঋণ অবলোপন বলা হয়। কোনো একটি ঋণ তিন বছর মন্দ মানে খেলাপি হলেই ব্যাংক তা আর্থিক স্থিতিপত্র থেকে বাদ দিতে পারে। তবে নির্ধারিত পরিমাণের বেশি হলে অবলোপনের আগে মামলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অবলোপনের ফলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর সুযোগ পায় ব্যাংক। যদিও ঋণগ্রহীতা পুরো টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত খেলাপি হিসেবেই বিবেচিত হন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে ২০০৩ সাল থেকে ব্যাংকগুলো ঋণ অবলোপন করে আসছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, ঋণ অবলোপনের আগে অবশ্যই অর্থঋণ আদালত আইন অনুযায়ী মামলা করার নির্দেশনা রয়েছে। কৃষি, সিএমএসএমই ঋণসহ অন্যান্য খাতের ক্ষুদ্র অঙ্কের ঋণের মামলা খরচ প্রায়ই বেশি হয়। ফলে এখন থেকে অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩-এর আওতায় অত্যাবশ্যকীয়ভাবে মামলাযোগ্য না হলে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত মামলা করা ছাড়াই অবলোপন করা যাবে। এ ক্ষেত্রে স্থগিত সুদ বাদে অবশিষ্ট ঋণের সমপরিমাণ প্রভিশন সংরক্ষণের নির্দেশনা বলবৎ থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, একটি সময় যে কোনো অঙ্কের খেলাপি ঋণ অবলোপনের আগে মামলা করতে হতো। তবে ক্ষুদ্রঋণে মামলা খরচ অনেকাংশে বকেয়া ঋণের পরিমাণের চেয়ে বেশি হয়। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রথমে ২০১৩ সালে মামলা না করেই ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ অবলোপনের সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পরবর্তী সময়ে ২০১৯ সালে অপর এক নির্দেশনার মাধ্যমে এই অঙ্ক দুই লাখ টাকা করা হয়। এখন তা আরও তিন লাখ টাকা বাড়ানো হলো।