দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নানা ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব করার লক্ষ্যই মূলত বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কমানো। তবে এসব কেন্দ্র নির্মাণে খরচ কম নয়, বরং বেড়েই চলেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তার চেয়ে দুই-তিন গুণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে বাংলাদেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের এ খরচ সামগ্রিকভাবে উৎপাদন ব্যয়ে যুক্ত হওয়ায় তার প্রভাব পড়ছে বিদ্যুতের দামে।
জ্বালানিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ার পেছনে চড়া মূল্যে জমি অধিগ্রহণ, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো, উচ্চমূল্যে প্রকল্পের কেনাকাটা ও দুর্নীতিই বড় কারণ। এসব খরচ সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয়ে যুক্ত করে তা উঠিয়ে নেয়।
বাংলাদেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মূলধনি ব্যয়ের ওপর ২০১৮ সালে বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল ‘স্প্রিঙ্গার’-এ একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। ‘করাপশন সিগনিফিক্যান্টলি ইনক্রিজেস দ্য ক্যাপিটাল কস্ট অব পাওয়ার প্লান্ট ইন ডেভেলপিং কনটেক্সট’শীর্ষক গবেষণাটি করেন যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির দুজন বাংলাদেশী গবেষক—কুমার বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও মনজুর মোর্শেদ।
ওই গবেষণায় বিভিন্ন ধরনের জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে প্রতি কিলোওয়াট ক্যাপিটাল কস্টের (মূলধনি ব্যয়) হিসাব তুলে ধরা হয়। সেখানে দেখা যায়, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লাভিত্তিক সাবক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে প্রতি কিলোওয়াটে ব্যয় ১ হাজার ৫৮৪ ডলার, আল্ট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির ব্যয় ৩ হাজার ৩৪৩, গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ১৭৭ এবং গ্যাস ও তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ব্যয় ১ হাজার ১৬৪ ডলার। এছাড়া পরমাণু প্রযুক্তির বিদ্যুৎ প্রকল্প ব্যয় ছিল ৫ হাজার ৬২৫ ডলার।