শীত মৌসুমে বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে একসময় গাছিরা খেজুরগাছ থেকে রস নামানো ও গুড় তৈরির কাজটি নিজেরাই করতেন। রসের একটি অংশ নিতেন গাছি, একটি অংশ পেতেন গাছের মালিক। কিছু কিছু বিক্রি হতো। এই সনাতন ব্যবস্থা থেকে খেজুর গুড় উৎপাদন অনেকটা বাণিজ্যিক রূপ পেয়েছে আগেই।
এখন মৌসুম এলে খেজুরগাছ রীতিমতো ইজারা দেওয়া হয়। কোনো কোনো এলাকায় খেজুরগাছ বাণিজ্যিকভাবে লাগানো হয়। এই প্রক্রিয়ায় রস নামানো ও গুড় তৈরির কাজটি কোথাও কোথাও মজুরিভিত্তিক পেশা হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
এবারও শীতের শুরুতে উত্তরাঞ্চলের রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধায় খেজুরের গুড়ের বাণিজ্য জমে উঠেছে। এসব এলাকায় গুড় তৈরির অস্থায়ী কারখানাগুলোতে প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা দরে।
খেজুরের গুড় প্রস্তুতকারীরা জানান, প্রতিকেজি গুড় তৈরি করতে ৮-৯ কেজি খেজুরের রস লাগে। গুড় তৈরির প্রতিটি অস্থায়ী কারখানার অধীনে ১০০-৩০০টি খেজুর গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে ৩-৭ কেজি রস পাওয়া যায়।
প্রতিবছর নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। অধিক শীত ও কুয়াশা থাকলে গাছ থেকে বেশি রস পাওয়া যায়। এসব অস্থায়ী কারখানার প্রতিটিতে প্রতিদিন গড়ে ৪০-২০০ কেজি খেজুর গুড় উৎপাদন হচ্ছে। স্থানীয় ক্রেতারা কারখানা থেকেই এই গুড় কিনে নিচ্ছেন।