গত শতকের শেষ কিংবা একবিংশ শতকের শুরুর সময়। ভোজ্যতেলের বাজারে চট্টগ্রামের টি কে, আবুল খায়ের, এমইবি, মোস্তফা, এসএ, এনজিএসের মতো ১২টি গ্রুপের তুমুল প্রতিযোগিতা। খাতুনগঞ্জে সকাল শুরু হতো এসব প্রতিষ্ঠানের সয়াবিন-পামতেল বিক্রির কাগজ বা ডিও (চাহিদাপত্র) হাতবদলে। সড়কে-দোকানের সামনে থাকত ব্রোকারদের জটলা। শেয়ারবাজারের মতো অস্থিরতা, উত্তেজনা, দরপতন, ঊর্ধ্বগতি—এসব অনুষঙ্গের কোনো কমতি ছিল না। সয়াবিন ও পামতেলের মতো সরগরম ছিল চিনি, গম, ডাল কিংবা মসলার বেচাকেনাতেও।
মাত্র দুই দশক পেরিয়ে এখন খাতুনগঞ্জে এমন হাঁকডাক নেই। সে সময়ের বড় গ্রুপগুলোর অনেকেই ব্যবসা গুটিয়েছে। গুগলে অনুসন্ধান বাটনে ক্লিক করে কারও নাম পাওয়া যায় আদালতের শুনানির কার্যতালিকায়। কেউবা ব্যবসা পরিবর্তন করে অন্য শিল্পে সরব হয়েছে। কমেছে চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। সেই জায়গা নিয়েছে ঢাকার গুটিকয়েক বড় শিল্পগ্রুপ। একসময় যে খাতুনগঞ্জ থেকে বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্যের বাণিজ্যের উত্থান হয়েছিল, তা এখন ম্রিয়মাণ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সোনালি যুগের শেষ প্রান্তে চলে এসেছে খাতুনগঞ্জ। আগের মতো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নেই এখন। লেনদেন বাড়লেও ব্যবসায়ীর সংখ্যা কমেছে। তাতে প্রতিযোগিতাও কমে গেছে। প্রতিযোগিতামূলক দাম পাওয়ার জন্য যা ইতিবাচক নয়।
খাতুনগঞ্জের জৌলুশ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, দুই দশকে ভোগ্যপণ্যের বাজারের আকার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ও পরিবর্তন এসেছে। তাতে খাপ খাওয়াতে না পেরে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বড় শিল্পগ্রুপের অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। কেউবা ব্যাংকের খেলাপি হয়ে যাওয়ায় ব্যবসা এগিয়ে নিতে পারেনি। মূলত চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমে যাওয়ায় খাতুনগঞ্জের জৌলুশও কমে এসেছে। আবার দেশে নিত্যপণ্য মোড়কজাতের পরিমাণও বাড়ছে। তাতে খোলা পণ্যের অংশীদারি কমে খাতুনগঞ্জের অংশীদারি কমে গেছে।