শীতকালে জোড়া বা বাতের ব্যথা মাত্রাতিরিক্তভাবে বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে বয়স্ক লোকেরা, যাঁরা আর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ও অসটিও-আর্থ্রাইটিসে ভুগছেন, তাঁদের কষ্ট বহুলাংশে বেড়ে যায়। এ ছাড়া পেশি, লিগামেন্ট, হাড় ও স্নায়ুর ব্যথা তীব্র হয়। শীতকালে স্বাভাবিক নড়াচড়া কম হয় এবং বায়ুর চাপ কম থাকে বলে মানুষের টিস্যু ফুলে যায়।
ফলে জোড়া জমে যায় এবং ব্যথার উদ্রেক করে। শীতের প্রকোপে শরীরের রক্তনালির খিঁচুনি ও সংকুচিত হলে জোড়া, পেশি ও হাড়ে রক্ত চলাচল কমে যায় এবং ব্যথা বেড়ে যায়। শীতে স্নায়ুর সহ্যক্ষমতা কম থাকে এবং অল্পতেই উত্তেজিত হয় বিধায় ব্যথার অনুভূতি বেড়ে যায়। শীতকালে ঘাড়, কোমর ও হাঁটুর ব্যথা বেশি বাড়ে। এ ছাড়া কটি, গোড়ালি, কাঁধ, কনুই ও কবজি ব্যথাসহ জমে যায়। হাত সামনে-পেছনে নেওয়া ও হাত দিয়ে কিছু তোলা কষ্টকর। হাঁটু ও কোমর সোজা ভাঁজ করতে এবং বসতে-উঠতে ভীষণ অসুবিধা হয়।
করণীয়
♦ গরম কাপড় পরিধান করে শীত থেকে জোড়াকে রক্ষা করতে হবে।
♦ ব্যথানাশক জেল বা মলম দিয়ে হালকাভাবে জোড়ায় ম্যাসাজ করলে ব্যথা নিরাময় হবে।
♦ কুসুম কুসুম গরম পানির সেঁক (ময়েস্ট হিট) আর্থ্রাইটিসের ব্যথার জন্য খুবই কার্যকর। এর পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথা ও আর্থ্রাইটিসের অন্যান্য ওষুধ সেবন করতে হবে।
♦ অনেক সময় ব্যথা নিরাময়ে জয়েন্টে ইনজেকশন (স্টেরয়েড ও হায়ালুরোনিক এসিড) পুশেরও প্রয়োজন হয়।
♦ এক অবস্থায় (বসা, দাঁড়ানো) আক্রান্ত জোড়াকে বেশিক্ষণ রাখা যাবে না। সিঁড়ি দিয়ে তাঁর ওঠা-নামা কম করতে হবে।
♦ প্রয়োজনে হাতে স্টিক, পায়ে কুশনযুক্ত জুতা এবং গোড়ালি, হাঁটু, কোমর, ঘাড়, কাঁধ, কনুই ও কবজিতে সাপোর্ট বা ব্রেচ ব্যবহার করতে হবে।
♦ হালকা ব্যায়াম জোড়া ব্যথা উপশমে বেশ ভূমিকা পালন করে। শীতকালে কঠোর ব্যায়াম আক্রান্ত জোড়ায় রক্ত চলাচল কমিয়ে ব্যথা বাড়িয়ে দেয়। জোড়ার স্বাভাবিক নড়াচড়া এবং পেশি, টেনডন ও লিগামেন্টের নমনীয়তা জোড়াকে ব্যথামুক্ত রাখে।