'খাদের কিনারায়' শব্দটি দিয়েই বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতিকে সবচেয়ে ভালোভাবে প্রকাশ করা যায়। অথচ, বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ২০২১ সালের অক্টোবরের প্রথম দিকেই এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছিল। তারপরও পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
২০২০ সালের ঋণ পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে ২০২১ সালের অক্টোবরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি বিভাগের প্রণীত প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল যে ৪ জন বড় ব্যবসায়ী জনতা ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক থেকে ২১ হাজার ৬৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে। এসব ঋণ সময়মতো ফেরত না আসলে আমানতকারীরা সংকটে পড়তে পারেন।
এই ৪ ঋণগ্রহীতা হলেন— এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের ৪ সদস্য, এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও তার স্ত্রী, আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২১ হাজার ৬৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ঋণের মধ্যে মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যরা নিয়েছেন ৫৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এই পরিবারের হাতে রয়েছে ৭টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বড় অংকের শেয়ার।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে থাকা অল্প কয়েকজন ঋণগ্রহীতাকে এত বড় অংকের ঋণ দেওয়ার পর তারা যদি কোনো কারণে অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে আমানতকারীদের অর্থ ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে এবং ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনা বড় সমস্যায় পড়তে পারে।