বিশ্বে ৬০ শতাংশ চাষহীন আবাদযোগ্য জমি থাকা সত্ত্বেও আফ্রিকা কয়েক দশক ধরে খাদ্য আমদানিকারকরূপে আবির্ভূত হয়েছে। সাম্প্রতিক অনুমিত তথ্য অনুযায়ী, খাদ্য আমদানি খাত আফ্রিকা মহাদেশজুড়ে সবচেয়ে বড় বাজেটের বিষয়। ক্রমবর্ধমান খাদ্যের মূল্য এবং মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলারের মূল্যবৃদ্ধির মাঝে আফ্রিকার খাদ্য খরচ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে, যা আফ্রিকার দেশগুলোর হ্রাস পাওয়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ঋণের স্থায়িত্ব ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে অবমূল্যায়ন করে।
ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের মতে, আফ্রিকা ২০১৯ সালে খাদ্য আমদানিতে প্রায় ৪৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। বর্তমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে সাম্প্রতিক খাদ্য আমদানি ব্যয় আরো বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, বিশেষ করে এমন সব অঞ্চলে যেখানে অতিরিক্ত আমদানিনির্ভরতা রয়েছে এবং সেখানে বৈশ্বিক বাজারের মূল্য স্থানীয় বাজারে খাদ্যের মূল্যকেও বাড়িয়ে তোলে। এদিকে ডলারের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ইউএস ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার ক্রমাগত বেড়েছে। সেজন্য আফ্রিকার দেশগুলোর কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে, যা তাদের ঋণসেবার খরচ প্রবলভাবে বাড়িয়েছে। এতে পুরো আফ্রিকা মহাদেশে বিস্তৃতভাবে দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। একই সময়ে কভিড-১৯ মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আফ্রিকার সাপ্লাই চেইনের সম্ভাব্য খরচ আরো বেড়েছে। সর্বোপরি খাদ্যনিরাপত্তা একটি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা। তাই আফ্রিকার দেশগুলো আড়াই বছর ধরে কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে এ শিক্ষাই পেয়েছে যে সাপ্লাই চেইনের প্রতিবন্ধকতা ও সংরক্ষণবাদী নীতির কারণে তাদের মূল কৃষিজ পণ্যের ব্যবহার কমে এসেছে, যার ফলস্বরূপ বাজারমূল্য নাটকীয়ভাবে বেড়েছে।