বাংলাদেশে নানা সময়ে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক ও সামাজিক ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে, বুদ্ধিজীবীরা কোথায়? অর্থাৎ সমাজে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা খোঁজে মানুষ, কিন্তু সমাজব্যবস্থা নিজে সেটা কতটা বুঝতে পারে, সেটা অজানা।
আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় সহযোগীরা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের একটি বড় অংশকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। কেবল এই তারিখে নয়, ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে বিজয়ের আগমুহূর্ত পর্যন্ত তারা এই হত্যাযজ্ঞ চালায়। এর আগে মার্চ মাসে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা মুহূর্তেও ঘাতক বাহিনী অনেক বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে।
অনাদিকাল থেকে নানা দেশে, নানা প্রান্তরে, ইতিহাসের নানা বাঁকে বুদ্ধিজীবীরা বরাবর শিকার হয়েছেন শাসকদের ক্ষমতার বীভৎসতার। ১৯৭১ সালে এই মাটিতেও তাই ঘটেছে। মুক্তিযুদ্ধের শেষ মুহূর্তে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী যখন বুঝতে পারে যে তাদের পরাজয় অনিবার্য, তখন তারা তালিকা করে বাঙালির বরেণ্য সন্তানদের হত্যার পরিকল্পনা করে, লেলিয়ে দেয় আলবদর-আলশামস নামের ঘাতক বাহিনীকে। পরাজয়ের আগমুহূর্তে তারা চূড়ান্ত আঘাত হানে স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার অভিপ্রায়ে। পাকিস্তানি দুঃশাসনের সময় লেখক, সাংবাদিক, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীরা বিবেকের কণ্ঠস্বর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা সব অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। নিজেদের জ্ঞান-মনীষা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে জাতিকে পথ দেখিয়েছেন, আলোকিত করেছেন। আর এসব কারণেই তাঁরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের জিঘাংসার শিকার হয়েছেন।