দুই ফুসফুসের মাঝখানে মধ্যমণি হয়ে বসে থাকা হৃদ্যন্ত্রটির নানান রোগেও শ্বাসকষ্টই কখনো কখনো প্রধান সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়। বিশেষ করে হার্ট ফেইলিউরে (হৃৎপিণ্ডের বৈকল্য) শ্বাসকষ্টের কারণেই রোগীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হতে থাকে ধীরে ধীরে। এ ছাড়া হৃদ্যন্ত্রের জন্মগত ত্রুটি, হৃদ্যন্ত্রে রক্ত সঞ্চালনে বাধা বা হৃদ্যন্ত্রের চারপাশে পানি জমলেও মৃদু, মাঝারি বা তীব্র শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
ফুসফুস বা হৃৎপিণ্ডের সমস্যা ছাড়াও আছে আরও অনেক কারণ। শরীরে রক্তস্বল্পতা হলে অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট হওয়া ইত্যাদি সমস্যা প্রায়ই দেখা যায়। অতি স্থূল মানুষের অল্প হাঁটাচলাতেই শ্বাসকষ্ট হয়। থাইরয়েড হরমোনের অভাবে শ্বাসকষ্টের অভিযোগ জানান অনেক রোগী। এমনকি কখনো কখনো অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি হতে পারে অনেকেরই।
তবে যে কারণেই হোক না কেন, শ্বাসকষ্টের কারণ নির্ণয় করা খুব জরুরি। কারণ বের করে সঠিক চিকিৎসা না হলে শ্বাসকষ্টের তীব্রতা বেড়ে তা যেমন রোগীর অসহনীয় শারীরিক কষ্টের কারণ হয়, আবার সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া না হলে তা জটিল আকার ধারণ করতে পারে। অ্যাজমার কারণে শ্বাসকষ্ট হলে রোগী বছরের কিছু কিছু সময় শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন; সঙ্গে কাশি, কফ এবং শ্বাসযন্ত্র থেকে বাঁশির মতো আওয়াজ হওয়ার মতো সমস্যা থাকতে পারে, সেই সঙ্গে অ্যালার্জির ইতিহাসও থাকে। সিওপিডি রোগী সাধারণত ধূমপায়ী হন এবং সারা বছরই শ্বাসকষ্ট, কাশি ইত্যাদির ইতিহাস থাকে। এভাবে রোগীর ইতিহাস পর্যালোচনা করে, সেই সঙ্গে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শ্বাসকষ্টের সঠিক কারণ নির্ণয় করে সময়োচিত চিকিৎসা প্রদান করা জরুরি। তবে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে শীত এলে ঠান্ডা, ধুলাবালু এড়িয়ে চলা। যেকোনো মৌসুমেই ধূমপান পরিহার করা। ঠান্ডা বা ধুলাবালুতে অ্যালার্জি থাকলে তার চিকিৎসা নেওয়া।