জীবন সুন্দর, বেঁচে থাকার প্রতিটি ক্ষণই গুরুত্বপূর্ণ। প্যালিয়েটিভ কেয়ারের কাজ হচ্ছে, একজন মানুষের শারীরিক কষ্টের বাইরে যে মানসিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্য রয়েছে সেসবের ভোগান্তি কমানো।
একজন মানুষ যখন নিরাময় অযোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়, তখন কিন্তু নির্দিষ্ট করে বলা যায় না মানুষটির স্থায়িত্বকাল কতটুকু। নিরাময় অযোগ্য রোগে একজন মানুষ কিছুদিন থেকে বহু বছর ভুগতে পারে। ভোগান্তির কয়েক সপ্তাহ, মাস, বছর যেতে পারে। নিরাময় অযোগ্য ও জীবন সীমিতকারী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পরিবারের শারীরিক, মনোসামাজিক ও আত্মিক প্রয়োজন নিরূপণ ও সমাধানের জন্য একটি বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা ব্যবস্থাই হচ্ছে প্যালিয়েটিভ কেয়ার বা প্রশমন সেবা। এই সেবার উদ্দেশ্য আপনার ও আপনার প্রিয় অসুস্থ মানুষটির দৈনন্দিন কষ্টগুলোকে কমিয়ে আনা এবং জীবনের মান উন্নয়নে সহায়তা করা।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্যালিয়েটিভ কেয়ার সহকারী (পিসিএ), নার্স এবং ডাক্তার সমন্বিত দলের সঙ্গে সমাজের জনসাধারণ ও স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে নিয়ে এ সেবা দেওয়া সম্ভব। নিরাময় অযোগ্য বিভিন্ন রোগ যেমন, ক্যানসার, এইডস কিংবা প্রান্তিক পর্যায়ের হার্ট ফেইলিউর, কিডনি অথবা ফুসফুসের রোগ, স্ট্রোক, স্মৃতি ভ্রষ্টতা ইত্যাদি স্বল্প বা দীর্ঘ মেয়াদি রোগে আক্রান্ত মানুষ এবং তাদের পরিবার এই সেবা ব্যবস্থায় উপকৃত হতে পারেন। শুধুমাত্র হাসপাতাল ভিত্তিক সেবার পরিবর্তে নিজের বাসায় চেনা পরিবেশে আপন মুখগুলোর মাঝে জীবনের শেষ সময়ের ভোগান্তি কমানো ও পরিচর্যার সুযোগ করে দেয় প্যালিয়েটিভ কেয়ার। রোগী ও তার পরিবারের পছন্দ ও আরামকে প্রাধান্য দেওয়া হয় এখানে। জীবনের জটিলতাগুলোকে যতটা সম্ভব সহজ করার মাধ্যমে রোগী ও তার পরিবারের জীবনযাত্রার গুণগতমান বৃদ্ধিতে অপরিসীম ভূমিকা রাখে এই প্রশমন সেবা। এমনকি রোগীর মৃত্যুর পরও শোকসন্তপ্ত পরিবারের শোক কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে প্যালিয়েটিভ কেয়ার।