চলমান বৈশি^ক অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব যে বাংলাদেশের ওপরও পড়ছে সে বিষয়ে সবাই সচেতন আছেন। করোনাজনিত অর্থনৈতিক অচলাবস্থা থেকে উত্তরণ শুরু হতে না হতেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনে ব্যাঘাত ঘটেছে। অন্যদিকে ডলারের বিপরীতে অধিকাংশ মুদ্রার দ্রুত অবমূল্যায়ন ঘটায় বাংলাদেশের টাকাও তার মূল্যমান হারিয়েছে প্রায় এক-চতুর্থাংশ। ফলে হালের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধমান অর্থনীতি হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনীতিও বেশ চাপের মুখে পড়েছে। এ রকম দুর্যোগকালে বিশ্ব অর্থনীতির বাস্তবতা পুরোপুরি অনুধাবন না করেই অনেকে আতঙ্কিতও হয়েছেন। স্বার্থান্বেষী মহল এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাড়তি অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করেছে। কেউ কেউ আতঙ্ক ছড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টাও করেছেন।
সত্যি বলতে এগুলোও খুব বেশি অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। বড় অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সময় এ উপসর্গগুলোকেও মোকাবিলা করতে হয়। আমাদের জন্য আশার বিষয় এই যে, অযথা আতঙ্ক কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব- এ দুটোই আমরা এখনো পর্যন্ত কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছি। রবীন্দ্রনাথ লিখে গিয়েছিলেন যে, টাকার অভাবটাই বড় অভাব নয়, বরং ভরসার অভাবই বড় অভাব। আমাদের নীতিনির্ধারকরা গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে নানা চ্যালেঞ্জ সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করে অর্থনীতির চাকাকে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি গতিশীল রাখার চেষ্টা করেছেন। গতিময় অর্থনীতির সুফল যেন সামাজিক পিরামিডের পাটাতনে থাকা প্রান্তিক মানুষের কাছেও পৌঁছায় তা নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগও নিয়েছেন, সে কারণেই এই ভরসার জায়গাটি তৈরি হয়েছে।