বিশাল পর্দার ফোরকে (4K) রেজুলেশনের নতুন মডেলের ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লে আনলো ওয়ালটন। ওয়ালটনের ডিসপ্লে ব্র্যান্ড ‘সিনেডি’-এর প্যাকেজিংয়ে বাজারে আসা এই ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লে মাল্টিপারপাস কাজে ব্যবহারযোগ্য। অর্থাৎ অফিস-আদালত, হাসপাতাল, ক্লাসরুম ইত্যাদি ক্ষেত্রে মাল্টিমিডিয়া ডিসপ্লে হিসেবে এগুলোর বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। অফিশিয়াল ব্যবহারের পাশাপাশি ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লে বিনোদনেও অনন্য। বিশেষ করে বড় পর্দায় বিশ্বকাপ ফুটবলের মতো ইভেন্ট উপভোগে এই ডিসপ্লে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
সম্প্রতি গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের হেড কোয়ার্টারে নতুন মডেলের ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন ডিজি-টেকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী লিয়াকত আলী, ওয়ালটন হাই-টেকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইয়াসির আল ইমরান, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আজিজুল হাকিম, ওয়ালটন ডিজি-টেকের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জিনাত হাকিম, চীফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান রাদ প্রমুখ।
ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লে উদ্বোধনের আগে অতিথিরা ওয়ালটন হেডকোয়ার্টারে বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া পরিদর্শন করেন। সে সময় তারা ওয়ালটনের সুসজ্জিত ডিসপ্লে সেন্টার, রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, লিফট, কম্পিউটার, পিসিবি ও মোবাইল ফোন ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট ঘুরে দেখেন। তারা ওয়ালটনের অত্যাধুনিক প্রোডাকশন প্ল্যান্ট এবং ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া দেখে মোহিত হন।
পরিদর্শন শেষে সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার এক কথায় এমেইজিং। এখানে না এলে বোঝা যাবে না যে ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ কতদূর এগিয়ে গেছে। ওয়ালটন এ খাতে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
ওয়ালটন কম্পিউটার পণ্যের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান রাদ জানান, বর্তমানে বাজারে রয়েছে ৬৫ থেকে ৯৮ ইঞ্চি পর্যন্ত স্ক্রিন সাইজের অত্যাধুনিক ফিচারসমৃদ্ধ ৫ মডেলের ওয়ালটন ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লে। মডেলভেদে দাম ২৮৫,৭৫০ টাকা থেকে ৬৯৫,৭৮০ টাকার মধ্যে।
তিনি আরো জানান, ওয়ালটন ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লেতে ব্যবহৃত হয়েছে ফোরকে আল্ট্রা এইচডি এলইডি এবং এলসিডি আইপিএস ডিসপ্লে। মাল্টিটাচ সুবিধার পর্দার রেজ্যুলেশন ৩৮৪০ বাই ২১৬০ পিক্সেল। এর সঙ্গে ১৭৮ ডিগ্রি ভিউইং অ্যাঙ্গেল এবং ১৬:৯ এসপেক্ট রেশিও থাকায় বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার, অফিস মিটিং, ক্লাসরুমে ব্যবহার, ভিডিও দেখা, গেম খেলা, বই পড়া বা ইন্টারনেট ব্রাউজিং হবে আরো প্রাণবন্ত। ক্রিটিক্যাল এঙ্গেল থেকেও ব্যবহারকারী হাই-কোয়ালিটি পিকচার পাবেন।
এই ডিসপ্লের উচ্চগতি নিশ্চিতে ব্যবহৃত হয়েছে এমটি৯৯৫০ চিপসেট। এতে রয়েছে ১.৮ গিগাহার্টজ গতির কর্টেক্স এ৭৩ কোয়াড কোর প্রসেসর এবং মালি জি৫২ এমপি২ গ্রাফিক্স। এরসঙ্গে ৪ জিবি র্যাম এবং ৩২ গিগাবাইট অভ্যন্তরীণ মেমোরি থাকায় অনেক বেশি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা যাবে।
ওয়ালটনের ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লের সঙ্গে বিল্ট-ইন অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম দেয়া আছে। গ্রাহক প্রয়োজনে ওপিএস পিসি মডিউলের মাধ্যমে উইনডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবেন। ওয়াইফাই কিংবা ল্যান পোর্টের মাধ্যমে ইন্টারনেটে সংযুক্ত করা যাবে। ব্লুটুথ এবং মিররিং সুবিধার মাধ্যমে অন্যান্য ডিভাইস যেমন মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ইত্যাদির ডিসপ্লে হিসেবে সংযুক্ত করা যাবে।
ওয়ালটনের ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লের অন্যান্য বিশেষ ফিচারের মধ্যে রয়েছে –
– এইচডিএমআই, ইউএসবি টাইপ এ ও টাইপ সি, মাইক্রোফোন ইত্যাদি অসংখ্য পোর্ট।
– ওয়ালটনের ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লেতে রয়েছে মাল্টিটাস্কিং এর নানা সুযোগ।
– ডিসকপ্লেগুলো ব্ল্যাকবোর্ড বা হোয়াইটবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করার সুযোগের সাথে আছে নোট নেয়া ও ভিন্ন মিডিয়াতে অনলাইনে অফলাইনে নোট শেয়ার করার সুবিধা।
– এই ডিসপ্লে অল-ইন-ওয়ান পিসি ও ফোরকে (4K) স্ক্রিন হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে ।
– থাকছে পেন ব্যবহার করে লেখা বা আঁকা ও ১৬ টি পয়েন্টে একসাথে টাচ করে কাজ করার সুবিধা । ফলে ক্লাসরুম কিংবা মিটিংয়ে মাল্টিমিডিয়া বোর্ড হিসেবে ব্যবহার করা যাবে সহজেই।
– এতে সরাসরি ইউটিউবসহ অন্যান্য ওয়েব ও ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ভিডিও দেখার পাশাপাশি টিভি কার্ডের মাধ্যমে ক্যাবল নেটওয়ার্কে টিভি দেখার সুবিধা রয়েছে।
– বিল্ট ইন ১৩ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা থাকায় স্পষ্ট ভিডিও কল কিংবা ভিডিও কনফারেন্সিং করা যাবে।
– অ্যালুমিনিয়াম ও মেটাল প্লেটে তৈরি বলে ওয়ালটনের ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লে আকর্ষণীয় ও দীর্ঘস্থায়ী।
– এই ডিসপ্লেতে এইচডিএমআই ও ভিজিএ উভয় ধরনের ইনপুট পোর্ট থাকায় আধুনিক কিংবা পুরাতন সব ধরনের কম্পিউটার ডিভাইসে সহজেই ব্যবহার করা যাবে।
– রয়েছে ১৫ ওয়াটের দুইটি বিল্ট ইন স্পিকার। ফলে আলাদা অডিও ডিভাইসের সংযোগ ছাড়াই ব্যবহারকারী প্রয়োজনীয় অডিও সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
ওয়ালটনের ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লেতে ওয়াল মাউন্টিং অপশন রয়েছে। ফলে শুধু স্ট্যান্ডেই নয়, প্রয়োজনে এটি যে কোনো এলইডি টিভির মতো দেয়ালে স্থাপন করা যাবে। যারা নিয়মিত গেম খেলেন কিংবা অফিশিয়াল কাজে প্রেজেন্টেশন বা মিটিং এর জন্য বড় স্ক্রিন ব্যবহারের প্রয়োজন হয়, তাদের জন্য এই অপশনটি বাড়তি সুবিধা হিসেবে কাজ করবে।
ইন্টারঅ্যাকটিভ ডিসপ্লেতে এক বছরের ওয়ারেন্টি দিচ্ছে ওয়ালটন।