বাংলাদেশে করদাতা ও গ্রহীতার সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। অনেকের কাছে কর দেওয়ার বিষয়টি আতঙ্কের। আর কর যাঁরা নেন, তাঁদের মানসিকতা সহযোগিতার পরিবর্তে আগ্রাসী। করের টাকার সদ্ব্যবহার হচ্ছে কিনা, তার জবাবদিহিতাও কম। কর দেওয়া সম্মানের বিষয়, এমন মানসিকতা তৈরি হয়নি। কর প্রশাসন সেকেলে, সেখানে বাস্তবভিত্তিক সংস্কার নেই। কর আইন সহজবোধ্য নয়। সব মিলিয়ে রাজস্ব আদায়ে সংস্কার এখন সময়ের দাবি।
শনিবার 'বাংলাদেশের আয়কর আইনের ১০০ বছর: প্রত্যাশা এবং অর্জন' শীর্ষক সেমিনারে এমন পর্যবেক্ষণ বক্তাদের। রাজধানীর গুলশান ক্লাবে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট স্নেহাশিষ বড়ূয়া। সভাপতিত্ব করেন আইবিএফবি সভাপতি ও এনার্জিপ্যাক পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ূন রশীদ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, মোট জনসংখ্যা ও নিবন্ধিত কোম্পানির তুলনায় প্রকৃত করদাতার সংখ্যা সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে কম। ৭৪ লাখ টিআইএনধারীর মধ্যে মাত্র ২৩ লাখ রিটার্ন জমা পড়ে বাংলাদেশে। যেখানে নেপালে সাড়ে ৩০ লাখ টিআইএনধারীর মধ্যে ২২ লাখ এবং শ্রীলঙ্কায় ১৭ লাখের মধ্যে ১৫ লাখই রিটার্ন জমা দেন। প্রত্যক্ষ কর কম হওয়ার কারণে বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত ৯ শতাংশের মতো, যা নেপাল-ভুটানের চেয়েও কম। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে করদাতা ও গ্রহীতার সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ হতে হবে।