অতি সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আমন্ত্রণে একুশ শতকে মহাত্মা গান্ধীর প্রাসঙ্গিকতা বিষয়ে কথা বলতে হয়েছে। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষী গুরুদাস কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে সাংবাদিকতার অধুনা প্রকৃতি নিয়ে। নিজের বিশ্বাস ও চর্চার কারণে যখন যেখানে যাই, মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ এড়াতে পারি না। অতএব, দুই জায়গাতেই বাংলাদেশ এসেছে। এসেছে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার কারণ এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস; যা আমাদের প্রজন্মের মানুষ ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যক্ষ করেছি।
ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রধানতম বন্ধুরাষ্ট্র। শুধু তাই নয়, মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসের ভয়াবহ দুর্দিনে প্রতিবেশী দেশটি নিজেও আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার যে অংশে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়টি গড়ে উঠেছে, সেই মাটি ও তার জনজীবন ছাপিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরতায় দেশ ছেড়ে যাওয়া বাংলাদেশের লাখ লাখ উদ্বাস্তু। কিন্তু প্রশ্ন করাই যায়, সেখানকার নতুন প্রজন্ম সে ইতিহাস কতটা জানে? ইতিহাসের ঘটনাবলি প্রাচীন বটে কিন্তু পুরোনো বলেই ইতিহাস পরিত্যাজ্য নয়; তা করা সংগতও নয়।
বিষয়টি নিয়ে লিখব ভাবতে ভাবতেই পাকিস্তানের বিদায়ী সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার ইতিহাসবিষয়ক কয়েকটি মন্তব্য চোখে পড়ল। তিনি বলেছেন, পূর্ব পাকিস্তান (যা এক রক্তস্নাত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ) 'হাতছাড়া' হওয়ার বিষয়টি নাকি সামরিক ছিল না; ছিল এক রাজনৈতিক ব্যর্থতা। পাকিস্তানের প্রধান ইংরেজি দৈনিক ডনের খবরে জানা গেল- দেশটির বিদায়ী সেনাপ্রধান ২৩ নভেম্বর সেনাসদরের এক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেছেন। জেনারেল বাজওয়া এ মাসের পর অবসরে যাচ্ছেন। হয়তো দায়িত্ব হস্তান্তরের আগে সেনাপ্রধান হিসেবে এটিই তাঁর শেষ জনবক্তৃতা।