বাংলাদেশ নিয়ে সুসমাচারের ঘাটতি এখন প্রচুর। আগামী দিনগুলোতে আমাদের সময় কীভাবে কাটবে, তা নিয়ে দেশের নাগরিকদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে।
এমনই এক অবস্থায় বাংলাদেশকে নিয়ে কোনো সুখবরের দেখা মিললে আনন্দে বুকটা ভরে ওঠে। ভাবতে ইচ্ছা করে-পরিস্থিতি যত খারাপ বলে আমরা ভাবছি ততটা খারাপ নয়।
বিশ্ব পরিসরে এখন অর্থনৈতিক গবেষণার ক্ষেত্রে একটি বড় স্থান দখল করে আছে বিশ্বের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সূচক। সরকার সমর্থক ব্যক্তিরা টেলিভিশনের টকশোতে সরকারের সাফল্য তুলে ধরতে গিয়ে উচ্চকণ্ঠে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের সূচকগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইতিবাচক।
আমরা জানি, এতকাল ধরে বাংলাদেশ দেশি ও বিদেশি ঋণের কিস্তি দিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়নি। ঋণের কিস্তি দিতে গিয়ে খেলাপি হয়েছে এমন দেশ তো পৃথিবীতে আছে। সাম্প্রতিককালে আমরা শ্রীলংকার অর্থনৈতিক সংকট সম্পর্কে অনেক কথা শুনেছি। দেশটি বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারছে না বৈদেশিক মুদ্রার অভাবজনিত কারণে। একপর্যায়ে বাংলাদেশও শ্রীলংকাকে ডলার দিয়ে সাহায্য করেছে। এখন প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশ কি বৈদেশিক দায়দেনা সম্পূর্ণভাবে মিটিয়ে দিতে সক্ষম? শ্রীলংকা দেশ হিসাবে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। সাময়িকভাবে যেসব দেশ শ্রীলংকাকে ঋণ দিয়েছে, সেসব দেশ শ্রীলংকার ঋণকে রিশিডিউল করে দিতে পারে। কিন্তু চূড়ান্ত পর্যায়ে শ্রীলংকাকে দায়দেনা অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। যদি কোনো দেশ বিশাল ঋণের একটি অংশ মাফ করে দেয়, সেটা হবে ভিন্ন কথা। তবে এ ধরনের সুযোগের অপেক্ষায় থাকা যে কোনো দেশের পক্ষে আত্মঅবমাননাকর। আমরা প্রায়ই আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাটাতনগুলোকে মজবুত করতে চাই। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতা একটি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করে। যখন একটি দেশ অন্য একটি দেশের কাছ থেকে দায় পরিশোধে নমনীয়তা আশা করে, তখন দেশটি বুক ফুলিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চলাফেরা করতে পারে না।
গত ২২ নভেম্বর সংবাদপত্রে শিরোনাম হয়েছে, ‘বিশ্বে চাষের মাছে এখন তৃতীয় বাংলাদেশ’। চাষের মাছ উৎপাদনে দুই ধাপ এগোলো বাংলাদেশ। স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ রয়েছে তৃতীয় স্থানে। ১৯৮০ সালে দেশে স্বাদু পানির মাছের উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ৪০ হাজার টন। ২০২০ সালে এ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছিল ১২ লাখ ৫০ হাজার টনে। স্বাদু পানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের আগে রয়েছে ভারত ও চীন। ভারত ও চীনের এই অবস্থান অস্বাভাবিক নয়। ভৌগোলিকভাবে দেশ দুটি বিশাল এবং লোকসংখ্যাও বিশাল। দেখা যাবে স্বাদু পানির বিস্তার ভূখণ্ডগত কারণে বেশি হওয়ার কথা। তাই এ দেশ দুটিতে স্বাদু পানিতে মাছের প্রাপ্যতা বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি হবে এটাই তো স্বাভাবিক।