দেশে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে একটি ফু-ওয়াং সিরামিক। গাজীপুরের হোতাপাড়া এলাকায় এই প্রতিষ্ঠানের কারখানা। গ্যাসসংকটে ফু-ওয়াং সিরামিক কারখানার উৎপাদন অর্ধেকে নেমে গেছে। কারখানার উপমহাব্যবস্থাপক কামাল সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগে দৈনিক এক লাখ ৩০ হাজার বর্গফুট টাইলস উৎপাদন করা যেত।
গ্যাসসংকটের কারণে এখন উৎপাদন নেমে এসেছে ৭৫ থেকে ৮০ হাজার বর্গফুটে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত গ্যাস থাকে না। বাধ্য হয়ে তিন চুল্লির মধ্যে সন্ধ্যার পর দুটি সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। শ্রমিকদের বসিয়ে রেখে বেতন দিচ্ছি। উৎপাদন কমে যাওয়ায় খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ’
ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে সিরামিকের পণ্য (টেবিলওয়্যার) রপ্তানি করে ফার সিরামিকস। তাদের গাজীপুরের কারখানার দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা ৩২ হাজার টেবিলওয়্যার। গ্যাসসংকটের কারণে উৎপাদন প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে।
ফার সিরামিকস লিমিটেডের পরিচালক এবং বাংলাদেশ সিরামিক পণ্য উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিসিএমইএ) সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে সিরামিকশিল্পে গ্যাস সরবরাহের দাবি জানিয়েছি। তবে কারখানাগুলো বিভিন্ন এলাকায় হওয়ার কারণে এটি করা সম্ভব নয়। সরকার চাইলে এলাকাভিত্তিক গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা নিতে পারে। ’
ফু-ওয়াং ও ফার সিরামিকসের মতো সিরামিকশিল্পের অনেক কারখানাই গ্যাসসংকটের কারণে সক্ষমতা অনুযায়ী উৎপাদন করতে পারছে না। কারণ সিরামিক কারখানার জন্য গ্যাস অতিপ্রয়োজনীয় জ্বালানি। যদিও এলাকাভেদে কিছু কারখানায় গ্যাসের সমস্যা কমবেশি হচ্ছে।
সিরামিক খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, সিরামিক খাতে বর্তমানে ৭০টি প্রতিষ্ঠান আছে। তার মধ্যে ২৫টির বেশি বৃহৎ কারখানা চার-পাঁচ মাস ধরে তীব্র গ্যাসসংকটে ভুগছে। গাজীপুর, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহের সিরামিকপণ্য, টাইলস ও স্যানিটারিওয়্যার কারখানাগুলোতে দৈনিক আট থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত প্রয়োজনীয় গ্যাসের চাপ থাকছে না। ফলে কারখানাভেদে উৎপাদন প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে, যার কারণে কম্পানিগুলো লোকসান গুনছে। এভাবে আর কয়েক মাস চলতে থাকলে কারখানা বন্ধ করা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প থাকবে না বলেও উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।