জীবাণুর সংক্রমণ মোকাবিলার ওষুধ হলো অ্যান্টিবায়োটিক। কিন্তু সেই জীবাণুই যদি হয়ে যায় অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী? তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে আর জীবাণুর সংক্রমণ থেকে রক্ষা মেলে না। আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী জীবাণুর সংক্রমণ। দিন দিন এগুলো এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠছে যে এগুলোর চিকিৎসার জন্য ‘সংরক্ষিত’ শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকেও আর কাজ হচ্ছে না।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের অণুজীববিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এস এম সামসুজ্জামান বলেন, ‘প্রয়োজন ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক সেবন, ভুল মাত্রায় সেবন, দুই ডোজের মাঝের সময়ের ব্যবধান সঠিকভাবে মেনে না চলা, নির্দিষ্ট দিন পেরোনোর আগেই অ্যান্টিবায়োটিক বন্ধ করে দেওয়া প্রভৃতি কারণে জীবাণু অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী হয়ে ওঠে।’
কীভাবে বাড়ে জীবাণুর ক্ষমতা?
জীবাণু মেরে ফেলার জন্যই আমরা অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করি। কিন্তু এতে কোনো অনিয়ম হলে কিছু জীবাণু বেঁচে যায়। ওই অ্যান্টিবায়োটিকটিকে তারা চিনে রাখে, অ্যান্টিবায়োটিককে প্রতিহত করতে নিজেদের জিনগত পরিবর্তন করে, এতে করে জীবাণুটির পরবর্তী প্রজন্ম হয়ে ওঠে অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী। অথচ নিয়ম মেনে ওষুধটি খেলে বাকি জীবাণুগুলোও মরে যেত, ক্ষমতাসম্পন্ন প্রজন্মেরও আর জন্ম হতো না। অন্যদিকে অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে দেহের উপকারী জীবাণুগুলোও হয়ে উঠতে পারে মারাত্মক ক্ষতিকর।
হয়ে যেতে পারে মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (অনেক অ্যান্টিবায়োটিক–প্রতিরোধী), এক্সট্রিম ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (অল্প কিছু মূল্যবান অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া অন্য অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না) কিংবা প্যান ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (কোনো একটি অ্যান্টিবায়োটিক এককভাবে আর কার্যকর হয় না)। যিনি এ ধরনের মারাত্মক জীবাণুর দ্বারা সংক্রমিত, তাঁর কাছ থেকে এ জীবাণু এমন কারও মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে, যিনি হয়তো অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে কখনোই অনিয়ম করেননি।