আমার পরিচিত অনেকেই ফেসবুকে অতিমাত্রায় সক্রিয়। যদি জানতে চাওয়া হয় সারাদিন এত কী দেখেন? তখন কেউ কেউ খুব দৃঢ়তার সঙ্গে জবাব দেয়, সেখান থেকে ‘অনেক কিছু’ জানা যায়! কেউবা মৃদুস্বরে অনেক কিছু শেখার দাবিও করে। শুধু ফেসবুক নয়, ইউটিউবসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তদের এটা মোক্ষম হাতিয়ার। কেউ নেতিবাচক কিছু বলামাত্রই তারা এ ব্রহ্মাস্ত্র প্রয়োগ করে। তাই মনে প্রশ্ন জাগে—সত্যিই কী এত কিছু জানা দরকার? কিংবা না জানলে খুব কী ক্ষতি হবে?
এ প্রসঙ্গে ছোটবেলায় শোনা এক গল্প মনে পড়ছে। এক লোক নিয়মিত বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ শুনতে যেত। এমনকি কষ্ট করে বহুদূরে গিয়েও শুনত। একদিন তার কাজের ছেলেটাকে সঙ্গে নিল। ছেলেটা লেখাপড়া জানত না। ধর্মীয় জ্ঞানও ছিল না। তাই দীর্ঘ ওয়াজে তেমন কিছুই বুঝল না। তবে একটা বিষয় বুঝতে পারল, প্রস্রাব করার পরে ঢিলা-কুলুপ ব্যবহার জরুরি। আগে বিষয়টার গুরুত্ব জানত না। এখন সেটা বোঝার পর সর্বদা সেটা মেনে চলে। কিছুদিন পর বর্ষা শুরু হলো। মাঠে-ঘাটে শুকনা মাটি পাওয়া যায় না। ফলে তাকে সবসময় সঙ্গে করে ‘মাটির ঢিলা’ বয়ে বেড়াতে হয়।
কিছুদিন পর সেই ব্যক্তি আবার ছেলেটাকে বলল—চল, ওয়াজ শুনে আসি। তখন সে বলল—না, আমি আর যাব না। একবার ওয়াজ শুনে যে বিপদে পড়েছি! লোকটি অবাক হয়ে জানতে চাইল, ওয়াজ শুনে বিপদ হবে কেন? তখন ছেলেটা বিস্তারিত বলল। সব শুনে সেই ব্যক্তিমুচকি হেসে বলল, আমি তো কত ওয়াজই শুনি। আমাকে কয়টা মানতে দেখেছিস? তখন ছেলেটা খুব অবাক হয়ে বলল— যদি নাই মানি তাহলে সেটা শোনার দরকার কী?