উন্নয়ন ও শাসনতন্ত্রের প্যারাডক্স

দেশ রূপান্তর নাজমুল আহসান প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২২, ০৯:৪৩

বাংলাদেশ নামক এই ভূখন্ডের মানুষ নিজস্ব রাষ্ট্রব্যবস্থা তৈরি করার সুযোগ পেয়েছে ১৯৭১ সালের দেশের স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে। আমরা সবাই জানি আমাদের এই স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে অনেক ত্যাগ ও তিতিক্ষার মাধ্যমে। বাংলাদেশ নামক দেশটি যখন তৈরি হয় তখন উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত নানান সমস্যায় দেশের মানুষ ছিল জর্জরিত। ভঙ্গুর অবকাঠামো, অতি দারিদ্র্যের হার, পুষ্টিহীনতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক চাহিদা ও অধিকারের অপ্রাপ্তি ছিল প্রায় সর্বব্যাপী। উল্লেখ্য, এর পেছনে রয়েছে ঔপনিবেশিক যুগ থেকে শুরু করে ধারাবাহিকভাবে   পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ-বঞ্চনা ও পরাধীনতা। আর এ কাজে তারা ব্যবহার করেছে তাদের প্রশাসন ও সামরিক তন্ত্রকে। গত পঞ্চাশ বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পরিবর্তন চোখে পড়ার মতো। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে এ দেশের অগ্রগতি অনেকের জন্য বিস্ময়কর। অনেকে একে ‘প্যারাডক্স’ বা স্ববিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। প্যারাডক্স এই অর্থে যে শাসনব্যবস্থায় ধারাবাহিক চ্যুতি থাকা সত্ত্বেও কীভাবে ধারাবাহিক উন্নয়ন করা সম্ভব? এতসব পরিবর্তন সত্ত্বেও এ দেশে ধীরে ধীরে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য বাড়ছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতার প্রকট ঘাটতি, ক্ষমতার কেন্দ্রিকতা, গোষ্ঠীগত স্বার্থের প্রাধান্য এবং জনগণের একটা বড় অংশের প্রান্তিকতা এখনো একটি বড় উন্নয়ন ইস্যু। অনেকে এটাকেই ‘প্যারাডক্স’-এর ফলাফল হিসেবে দেখে থাকেন আর এটিই আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়ন পরিস্থিতি পরবর্তী ধাপে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা।


১৯৭১ সালে স্বাধীন হলেও, স্বাধীন দেশেও রাষ্ট্র পরিচালনার কাঠামো ছিল সেই ঔপনিবেশিক আমলের পুরনো ব্যবস্থাপনায়। বিজ্ঞজনরা বলেন, এখনো আমরা পাকিস্তান আমল তো বটেই অনেক ক্ষেত্রে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কাঠামো অনুসরণ করে রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালনা করছি।


অনেক সময় ঔপনিবেশিকতার দর্শন শুধু রাষ্ট্রকাঠামোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, আমরা জনগণও এর দ্বারা প্রভাবিত। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলার আকাশ-বাতাস ও প্রকৃতিকে যতটা অন্তরে ধারণ করেছিলেন, ততটাই বুঝেছিলেন এ দেশের মানুষকে। তিনি তো আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘সাত কোটি সন্তানেরে, হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙালি করে, মানুষ করনি’। কবিগুরু বাঙালি ও মানুষ হওয়ার মধ্যে কী পার্থক্য খুঁজে পেয়েছেন তা এত সহজ করে বলা সহজ হয়। তবে স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু এর একটি ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে রেসকোর্স ময়দানের এক সমাবেশে তিনি কবিগুরুকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘সাত কোটি বাঙালি আজ মানুষ হয়েছে।’ স্বাধীনতার সমসাময়িককালে বাঙালি জাতীয়তাবোধ ও সংস্কৃতির মধ্যে সমতা ও সাম্য বোধের যে উন্মেষ ঘটেছিল তা ক্ষমতার মোহের আবহে খুব বেশিদিন টিকে থাকতে পারেনি। যেমন পারেনি সমাজ কাঠামোকে দুর্নীতির গ্রাস থেকে মুক্ত করতে। স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু এই সংকট বুঝতে পেরে রাষ্ট্রকাঠামো পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার কাছে যে বিকল্প ছিল তা থেকে তিনি একটি বেছে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, অবশ্য, এই কাঠামো কতটুকু ভালো, কতটুকু মন্দ, কতটুকু গণতান্ত্রিক বা উদার তা নিয়ে প্রশ্ন করার যথেষ্ট সুযোগ আছে এবং থাকবেও।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us