তথ্যের চাপে দিশেহারা!

বণিক বার্তা ড. মো. আব্দুল হামিদ প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২২, ০২:০২

আমার পরিচিত অনেকেই ফেসবুকে অতিমাত্রায় সক্রিয়। যদি জানতে চাওয়া হয় সারাদিন এত কী দেখেন? তখন কেউ কেউ খুব দৃঢ়তার সঙ্গে জবাব দেয়, সেখান থেকে ‘অনেক কিছু’ জানা যায়! কেউবা মৃদুস্বরে অনেক কিছু শেখার দাবিও করে। শুধু ফেসবুক নয়, ইউটিউবসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তদের এটা মোক্ষম হাতিয়ার। কেউ নেতিবাচক কিছু বলামাত্রই তারা এ ব্রহ্মাস্ত্র প্রয়োগ করে। তাই মনে প্রশ্ন জাগে—সত্যিই কী এত কিছু জানা দরকার? কিংবা না জানলে খুব কী ক্ষতি হবে?


এ প্রসঙ্গে ছোটবেলায় শোনা এক গল্প মনে পড়ছে। এক লোক নিয়মিত বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ শুনতে যেত। এমনকি কষ্ট করে বহুদূরে গিয়েও শুনত। একদিন তার কাজের ছেলেটাকে সঙ্গে নিল। ছেলেটা লেখাপড়া জানত না। ধর্মীয় জ্ঞানও ছিল না। তাই দীর্ঘ ওয়াজে তেমন কিছুই বুঝল না। তবে একটা বিষয় বুঝতে পারল, প্রস্রাব করার পরে ঢিলা-কুলুপ ব্যবহার জরুরি। আগে বিষয়টার গুরুত্ব জানত না। এখন সেটা বোঝার পর সর্বদা সেটা মেনে চলে। কিছুদিন পর বর্ষা শুরু হলো। মাঠে-ঘাটে শুকনা মাটি পাওয়া যায় না। ফলে তাকে সবসময় সঙ্গে করে ‘মাটির ঢিলা’ বয়ে বেড়াতে হয়।


কিছুদিন পর সেই ব্যক্তি আবার ছেলেটাকে বলল—চল, ওয়াজ শুনে আসি। তখন সে বলল—না, আমি আর যাব না। একবার ওয়াজ শুনে যে বিপদে পড়েছি! লোকটি অবাক হয়ে জানতে চাইল, ওয়াজ শুনে বিপদ হবে কেন? তখন ছেলেটা বিস্তারিত বলল। সব শুনে সেই ব্যক্তিমুচকি হেসে বলল, আমি তো কত ওয়াজই শুনি। আমাকে কয়টা মানতে দেখেছিস? তখন ছেলেটা খুব অবাক হয়ে বলল— যদি নাই মানি তাহলে সেটা শোনার দরকার কী?


সোশ্যাল মিডিয়া থেকে যারা নিত্যদিন অনেক কিছু শেখার দাবি করেন তাদের কাছেও প্রশ্নটা করতে ইচ্ছা হয়। যদি মানার কোনো চেষ্টা বা পরিকল্পনা নাই থাকে তবে এত কিছু জানার দরকারটা কী? বিষয়টা আরেকটু খোলাসা করে বলি। আপনার জানামতে এমন একজন ধূমপায়ী কী আছে যে জানে না ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? খুব সম্ভবত না। অর্থাৎ তারা জানে কিন্তু ধূমপান ত্যাগে সচেষ্ট হয় না।


আবার আপনার পরিচিত একজন মুসলিমও কী আছে যে জানে না দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ? এমন একজনও নাই। কিন্তু তাদের শতকরা কয়জন নিয়মিত নামাজ পড়ে? এর মানে হলো—তারা জানে কিন্তু মানে না! ঠিক তেমনিভাবে শরীরচর্চার উপকারিতা জানা, নিত্য-নতুন রেসিপি শেখা অসংখ্য মানুষ রয়েছে যাদের দৌড় ওই জানা বা তথাকথিত শেখা পর্যন্ত! বাস্তব জীবনে সেগুলো প্রয়োগের ন্যূনতম চেষ্টাও অনুপস্থিত। কিছু মানুষ শুরু করলেও ধরে রাখতে পারে না।


কিছুদিন আগে মোটিভেশনাল ইভেন্টগুলো ভালোই মার্কেট পাচ্ছিল। কিছু তরুণকে দেখতাম সেগুলোয় অংশগ্রহণের জন্য মরিয়া। অথচ সে বক্তারা যা বলতেন তার মূলকথা জানে না এমন দর্শক সেখানে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বক্তারা হয়তো নিজ নিজ আঙ্গিকে সেগুলো উপস্থাপন করেন, কিন্তু মূল কথা সবারই জানা। আর যদি পূর্বে জানা নাও থাকে, কোনো ইভেন্ট থেকে সেগুলো জানার পরে ঠিক কয়জন ব্যক্তিজীবনে সেগুলো চর্চা করতে সচেষ্ট হয়? এক বা দুই শতাংশ? আমার ধারণা তারও কম!

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us