বাংলাদেশে সুশাসন কথাটা চালু হয়েছে আশির দশকে। আগে বলা হতো আইনের শাসন। রাজনীতি ও সরকারের ভূমিকা যথাসম্ভব বিবেচনার বাইরে রেখে প্রশাসনব্যবস্থা দ্বারা ভালোভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা এবং জনজীবন পরিচালনাকে বলা হয় সুশাসন। তবে এর মধ্যে সুশীল সমাজ, সংগঠন এবং এনজিও কার্যক্রমও যুক্ত। কথিত এ সুশাসনের মর্মে এ ধারণা প্রচ্ছন্ন থাকে- রাজনীতি নিকৃষ্টই থাকবে, সরকারও (মন্ত্রিপরিষদ, জাতীয় সংসদ ও সরকারি দল) নিকৃষ্ট চরিত্রেরই হবে। এর মধ্যে প্রশাসনব্যবস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করে তা দ্বারা ভালোভাবে রাষ্ট্র ও জনজীবন পরিচালনা করতে হবে। এতে বিদেশি সরকার দ্বারা পরিচালিত সুশীল সমাজ, সংগঠনগুলো সক্রিয় থাকে সরকারকে সুশাসনের কাজে চাপে রাখার জন্য। এ ব্যবস্থায় সরকারের মূল কাজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা।
বাংলাদেশে পুলিশ-র্যাব-বিজিবি, প্রয়োজনে সেনাবাহিনী দিয়ে প্রচলিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা হচ্ছে। মামলা-মোকদ্দমা বেড়েই চলেছে। বিচারহীনতার অপসংস্কৃতিও চলছে। কথিত এই সুশাসন একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রনীতির অংশ। এই রাষ্ট্রনীতির মধ্যে আরও আছে দাতা সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, বৈদেশিক ঋণের দ্বারা পরিচালিত উন্নয়ন প্রকল্প, এনজিও-সিএসও ইত্যাদি। এই রাষ্ট্রনীতিতে পলিটিক্যাল সোসাইটিকে (মন্ত্রিপরিষদ, জাতীয় সংসদ, প্রশাসনব্যবস্থা, রাজনৈতিক দল) যথাসম্ভব কম ক্ষমতা ও গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং সিভিল সোসাইটিকে (সিএসও, এনজিও, উন্নয়ন সহযোগী, উন্নয়ন সংস্থা) যথাসম্ভব অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই রাষ্ট্রনীতি ও রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপদান এবং পরিচালনায় বিশ্বব্যাংক, ইউনেস্কো, ইউনিসেফ ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল পালন করে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।