গত বছর পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন করে সরকার। ওই বোর্ডে পোশাক খাতের মালিকদের পক্ষ থেকে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রতিনিধি ছিল সংগঠনটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। কিন্তু ওই বোর্ডে কোনো প্রতিনিধির ঠাঁই হয়নি একই খাতের আরেক সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ)। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংগঠনের নেতারা। বিশেষ করে সংগঠনটির বেশ কয়েকজন নেতার একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণেই এই অচালবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মজুরি বোর্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে বিকেএমইএ’র কোনো প্রতিনিধি না থাকায় সেটা সংগঠনের ব্যর্থতা বলেই ধরে নিয়েছেন নেতারা। জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৩ই জানুয়ারি মুজরি বোর্ড গঠিত হয়। ওই বোর্ডে পোশাক খাতের মালিকদের পক্ষ থেকে বিজিএমইএ’র সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান এবং শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় শ্রমিক লীগের নারীবিষয়ক সম্পাদিকা বেগম শামসুন্নাহার ভুইয়ার নামও ঘোষণা হয়। এ ছাড়া চার সদস্য বিশিষ্ট স্থায়ী নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন সিনিয়র জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম। আর তিনজন সদস্য হলেনÑ মালিকপক্ষের প্রতিনিধি বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের শ্রম উপদেষ্টা কাজী সাইফুদ্দীন আহমদ, শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি ফজলুল হক মন্টু, তিনি বাংলাদেশ শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি। নিরপেক্ষ প্রতিনিধি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন। এর আগে ২০১৩ সালে সর্বশেষ মজুরি বোর্ড ঘোষণা করা হয়েছিল। ব্যবসায়িক সংগঠনের মধ্যে প্রথম বিজিএমইএ পোশাক খাতে নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের জন্য সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছিল। এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখছিল সরকার। কিন্তু সেই ক্ষেত্রে পোশাক শিল্পের অন্যতম সংগঠন বিকেএমইএ ছিল সম্পূর্ণ উদাসীন। এ কারণে বিভিন্ন সময় মজুরি বোর্ডে সরকারের পক্ষ থেকে স্থান পায়নি বিকেএমইএ। নারায়ণগঞ্জের বেশ কয়েকজন গার্মেন্ট মালিক জানান, মজুরি বোর্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে বিকেএমইএ’র প্রতিনিধিত্ব না থাকায় গার্মেন্ট মালিকরা কথা বলার অধিকার হারিয়েছে। এ জন্য বিকেএমইএ’র নিষ্ক্রিয়তাই দায়ী বলে তারা মনে করছে। বিশেষ করে বর্তমানে বিকেএমইএ’র শীর্ষ নেতা বেশিরভাগ সময় অসুস্থ থাকায় ঝিমিয়ে পড়েছে এর কার্যক্রম। এমনকি এই শিল্পে অস্থিরতা চললেও নানা কারণে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছে না কেউ। এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র সচিব সুলভ চৌধুরী বলেন, সর্ব শেষ মজুরি বোর্ডের সময় বিকেএমইএকে বাণিজ্যমন্ত্রণালয় থেকে ফোন করা হয়েছিল। তখন বিকেএমইএ সভাপতি দেশের বাইরে ছিলেন। বোর্ডে না থাকার এটাই কারণ।