বাজারে চাহিদা অনুযায়ী চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া গেলেও সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। আমদানিকৃত চিনি পরিশোধন করে বিক্রয়কারী বেসরকারি চিনিকলগুলোর সামনে জমেছে চিনি নিতে আসা ট্রাকের দীর্ঘ সারি। সংকটের সুযোগ নিয়ে বিশেষ চাহিদা আদেশের (ডিও) মাধ্যমে মিলগুলোর বিরুদ্ধে বেশি দামে চিনি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
চিনির এই সংকটের পেছনে বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির মূল্যবৃদ্ধির কথা বলা হলেও গুরুত্বপূর্ণ একটা কারণ হলো, বেসরকারি আমদানিকারকদের ওপর একক নির্ভরশীলতা। বর্তমানে দেশে চিনির চাহিদা ১৮ থেকে ২০ লাখ টন।
রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলো একসময় বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টন চিনি উৎপাদন করত, যা বাজার নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করত। কিন্তু গত দুই বছরে ১৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলের মধ্যে ৬টির উৎপাদন বন্ধ রাখায় দেশীয় উৎপাদন কমে ৩০ হাজার টনে নেমে এসেছে। এতে দেশের চিনি খাত প্রায় শতভাগ আমদানিভিত্তিক বেসরকারি কলগুলোর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। ফলে চিনির বাজারের ওপর সরকারের কার্যত কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানিনির্ভরতা কমানোর কথা বলা হচ্ছে। অথচ যে খাতের বিকাশ হলে আমদানিনির্ভরতা হ্রাস করে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা যেত, সেই রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পকে নিদারুণ অবহেলার মধ্যে ফেলে রাখা হয়েছে। যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হলে রাষ্ট্রায়ত্ত কলগুলো চাহিদার উল্লেখযোগ্য অংশ সরবরাহ করতে পারত, সেই সঙ্গে হাজারো আখচাষি ও শ্রমিকের কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখতে পারত।