কাগজের দাম এখন দারুণ চড়া। এ কারণে বাজারে দেখা দিয়েছে কাগজ সংকট। গেল পাঁচ মাসের মধ্যে পাইকারিতে প্রতি টনে দাম বেড়েছে ৩৫ থেকে ৩৭ হাজার টাকা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের শিক্ষার অন্যতম উপকরণ খাতা কিনতে হচ্ছে অস্বাভাবিক দরে। খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর আগে কখনোই এমন দেখা যায়নি। চাহিদামতো কাগজ পাচ্ছেন না মুদ্রণশিল্পের মালিকরা। ফলে নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন বছরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই বিতরণ নিয়েও রয়েছে সংশয়।
এ পটভূমিতে পাইকাররা দোষ চাপাচ্ছেন কাগজকল মালিকদের ওপর। মিল মালিকরা বলছেন, ডলার ও বিশ্ববাজারে কাগজ তৈরির মন্ড বা ভার্জিন পাল্পের দর বাড়ার কারণে কাগজের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এছাড়া গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের কারণে উৎপাদনে ভজঘট তো আছেই। ফলে বাজারে কমেছে সরবরাহ। বাড়ছে কাগজের দাম।
করোনা পরিস্থিতি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশে কাগজ উৎপাদন কম হওয়া, ভার্জিন পাল্পের সংকট ও কাগজের আকাশছোঁয়া দরের কারণে আসছে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ৩৫ কোটি পাঠ্যবই ছাপার কাজও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে জানা গেছে, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য এবার ৩৪ কোটি ৬১ লাখ ৬৩ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে প্রাথমিক স্তরের ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৩ হাজার কপি এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য ২৪ কোটি ৬৩ লাখ ১০ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। প্রায় ৩৫ কোটি বই ছাপাতে প্রয়োজন হয় মোট এক লাখ টন কাগজ। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কাগজের কাঁচামাল সংকটের কারণে দেশের মিলগুলো পুরোদমে উৎপাদনে যেতে পারছে না।