ডলার সাশ্রয়ে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ কারণে জ্বালানি তেল থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে হিমশিম অবস্থা। ডলার মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পণ্যের কাঁচামাল, ভারী যন্ত্রাংশ আমদানিতেও অনেক ব্যাংক ঋণপত্র বা এলসি খুলতে পারছে না। কোনো কোনো ব্যাংক এলসি খোলা কমিয়ে দিয়েছে। ডলার বাঁচাতে সরকারি খরচে কর্মকর্তাদের সব রকম বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তবে এত কিছুর মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রে পিআর ও লবিস্টে ডলার খরচে রাশ টানতে পারছে না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মার্কিন আইন দপ্তরের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, শুধু চলতি বছরে বাংলাদেশের হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্টের কাজ করছে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে নেলসন মুলিনস রিলে অ্যান্ড স্কারবোরো এলএলপিকে নিয়োগ দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তিতে সই করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। চুক্তি অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশকে সেবা দেবে নেলসন মুলিনস। এ জন্য মাসে কমপক্ষে ২০ হাজার ডলার খরচ করতে হচ্ছে সরকারকে। এর বাইরে যদি বাংলাদেশের স্বার্থে নেলসন মুলিনসের কোথাও যেতে হয়, সেই খরচও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বহন করবে।
চলতি বছরের মাঝামাঝি মার্কিন কংগ্রেসের যে কর্মকর্তারা রয়েছেন, এমন একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করিয়ে দেয় নেলসন মুলিনস। বর্তমান ও সাবেক একাধিক কূটনীতিক এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কূটনীতিক বলেন, কংগ্রেস সদস্য হলেও একটি কথা ছিল। কংগ্রেসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য যদি লবিস্ট ধরতে হয়, তাহলে এত ডলার খরচ করে যুক্তরাষ্ট্রে দূতাবাস রেখে লাভ কি? তাদের সক্ষমতা কী?
র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশের পর চলতি বছরের ১ এপ্রিল রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বাংলাদেশ দূতাবাসের কার্যক্রম নিয়ে তীব্র সমালোচনা ও হতাশা প্রকাশ করা হয়।