কয়েক বছর ধরেই মাদক কেনাবেচার জন্য ‘নিরাপদ’ এলাকা হয়ে উঠেছে চনপাড়া। মাদকসেবীদের কাছেও এলাকাটি বেশ ‘পছন্দের’। এখানকার বেশ কিছু বাসাবাড়িতে মাদক সেবনেরও ব্যবস্থা রয়েছে। এ রকম ১১৪টি স্পট (মাদক সেবনের জায়গা) চনপাড়ায় থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ।
মাদক ব্যবসা এবং মাদকসেবীদের আড্ডা বন্ধে বছরখানেক আগে চনপাড়ায় মাদক নির্মূল কমিটি করা হয়। তবে এই কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা চারজন সরাসরি মাদক ব্যবসায় জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার চনপাড়ায় র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত রাশেদুল ইসলাম ওরফে সিটি শাহীন ছিলেন চনপাড়া মাদক নির্মূল কমিটির সদস্যসচিব। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক–সংশ্লিষ্টতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ২৩টি মামলা ছিল।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চনপাড়া মাদক নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক রাজু আহমেদ ওরফে রাজা চিহ্নিত মাদক কারবারি। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলাও রয়েছে। আর মাদক নির্মূল কমিটির দুই যুগ্ম সচিব ফাহাদ আহম্মেদ এবং স্বপন ব্যাপারীও তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ড চনপাড়া। এই ওয়ার্ডের সদস্য বজলুর রহমান গত বছরের নভেম্বর মাসে ৩৫ সদস্যের মাদক নির্মূল কমিটি করে দেন বলে পুলিশ সূত্র ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান। বজলুর রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। চনপাড়ার মাদক কারবারিরা ‘নেতা’ মানেন ইউপি সদস্য সদস্যকে বজলুকে। তাঁর জামাতা মো. রিপনের বিরুদ্ধেও মাদক মামলা রয়েছে। গত মাসে (অক্টোবর) গ্রেপ্তার হওয়ায় তিনি এখন কারাগারে।
মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয়–প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে চনপাড়ার ইউপি সদস্য বজলুর রহমানের বক্তব্য জানতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছে প্রথম আলো। গতকাল শনিবার দুপুরে চনপাড়ায় তাঁর বাড়ি এবং কার্যালয়ে গেছে প্রথম আলো। কিন্তু কোথাও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।