ভেবেছিলাম, এ সপ্তাহে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে লিখব। দক্ষিণ এশিয়াতে আর যাই হোক, বিষয়ের কোনো অভাব নেই। কখনো হবে বলেও মনে হয় না। আর আমার দেশে তো এত এত ঘটনা, তা নিয়ে রোজ কলাম বা উপসম্পাদকীয় কেন, চেষ্টা করলে আস্ত উপন্যাস লিখে ফেলা যায়।
কিন্তু অনুজ, তাপস দাশ ওদের প্রকাশনী, কেতাব-ই থেকে সবে সবে বের হয়েছে এমন একটি বই হাতে ধরিয়ে দিয়ে আমার সব ভাবনাচিন্তা উল্টেপাল্টে দিয়ে গেল। চারশো পঁয়শট্টি পাতার বইটি দেবেশ রায়ের ওপর। আমার ধারণা বাঙালি পাঠকদের কাছে দেবেশ রায়ের একটা আলাদা জায়গা আছে। আহমদ ছফা, অসীম রায়, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বা দেবেশ রায় অনেকটাই কাছাকাছি ঘরানার লেখক। তথাকথিত পপুলিস্ট লেখার দায় কখনো আহমদ ছফাদের মতো দেবেশ রায়েরও ছিল না।
দেবেশ রায়ের জীবনের দীর্ঘ সময় কেটেছে জলপাইগুড়িতে। ওই শহরেই জন্মেছেন আর এক পরিচিত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। তবে দেবেশ রায় সিনিয়র। পঞ্চাশের দশকেই ধীরে ধীরে পরিচিতি পাচ্ছেন। চুটিয়ে কমিউনিস্ট পার্টি করছেন। উত্তরবঙ্গের তরাই, ডুয়ার্সে চা শ্রমিকদের মধ্যে কমিউনিস্ট আন্দোলন তখন অন্য মাত্রা পাচ্ছে। কান পাতলেই তখন সারা উত্তরবঙ্গ-জুড়ে শোনা যাচ্ছে ফিসফিসানি, হাম ভুখ সে মরনে ওয়ালা... আজাদি কি ডঙ্কা বাজা...। তখন স্বপ্ন দেখার কাল। পার্টি ভাগাভাগি তো অনেক পরের কথা। তখন পার্টিতে রুটি ভাগ করে খাবার সময়। কমরেড শব্দে আবেগ আসে।