ডাক্তারদের কাছে শুনেছি, ডায়াবেটিক রোগীদের যেকোনো অসুখ হলেই তারা প্রথমেই দায়ী করে ডায়াবেটিসকে। এ যেন গ্রামের কুখ্যাত দাগি চোর কোথাও কোনো চুরি হলেই সবাই আঙুল তোলে তার দিকে। তা সেটা কলাটা-মুলাটা চুরি হোক কিংবা সিঁধেল চুরিই হোক। আর যদি বলি আমাদের সামগ্রিক প্রশাসন ব্যবস্থায় ডায়াবেটিস হচ্ছে দুর্নীতি, তাহলে বোধ হয় খুব একটা ভুল হবে না।
রাষ্ট্রযন্ত্রে দুর্নীতি এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যে হাজার-পাঁচ শ টাকা ঘুষ খাওয়ার সর্দিকাশি থেকে শুরু করে হাজার হাজার কোটি টাকা তছরুপের রক্তচাপ, হৃদরোগ, মায় ক্যান্সার পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে এই মাস্তানটা। তবে দুর্নীতির প্রাদুর্ভাব যে হাল আমলেই দেখা দিয়েছে এমন নয়, এই ভাইরাসটি ব্রিটিশ ইন্ডিয়া, পাকিস্তান এবং স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে বিভিন্ন শাসনামলে দোর্দণ্ড প্রতাপে বিরাজ করেছে। কখনো একটু কম, কখনো একটু বেশি। ফলে সাধারণ মানুষ সব সময় সব আমলেই দুর্নীতির জাঁতাকলে নিষ্পিষ্ট হয়েছে, দেশের উন্নয়ন হয়েছে ব্যাহত। তৃতীয় বিশ্বের একটি বড় ব্যাধি, বড় সমস্যা হচ্ছে দুর্নীতি।
এখানে একটা কথা উল্লেখ করা দরকার। সাধারণ মানুষের উপলব্ধি (ইংরেজিতে যাকে বলে ‘পিপলস পারসেপশন’) হচ্ছে, দিন যত যাচ্ছে দুর্নীতি তত বাড়ছে। আগে শতকরা ১০ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন ঘুষখোর। বাকি ৯০ জন ছিলেন মোটামুটি সৎ। এখন বলা হয় চিত্রটা উল্টো। শতকরা ৯০ জনই দুর্নীতিবাজ।