আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্তত অর্ধেক সংখ্যক আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম ব্যবহারের ঘোষণা দিয়ে বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) যতটা সমালোচিত হয়েছিল, ততটাই প্রশংসিত হয়েছে জালিয়াতির অভিযোগে গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন বন্ধ করে দিয়ে। শপথ নেওয়ার পর থেকে ইসি সম্পর্কে নানা সংশয় প্রকাশকারী অনেকেই বলেছেন, এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে কিছুটা হলেও আস্থা তৈরি হবে। বাঘা বাঘা মন্ত্রীসহ ক্ষমতাসীন দলের বড় নেতাদের সমালোচনার মুখেও ইসির অবিচল অবস্থানও মানুষের নজর কেড়েছে।
গত ১৫ অক্টোবর গাইবান্ধা উপনির্বাচন সম্পূর্ণ ইভিএমে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। সব কেন্দ্রেই ছিল সিসি ক্যামেরা। সিইসি ও কমিশনাররা ঢাকাস্থ প্রধান দপ্তরে বসেই ভোট পর্যবেক্ষণ করছিলেন। বিভিন্ন কেন্দ্রের গোপন কক্ষে বহিরাগতের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে এবং সংশ্নিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তাদের কাছে সদুত্তর না পেয়ে শেষমেশ নির্বাচনটি বন্ধ করেন তাঁরা। শুধু তাই নয়; ইতোমধ্যে নির্বাচনটির বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে তদন্তও সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা, যার ভিত্তিতে দোষীদের শাস্তি হওয়ার কথা। দেশের ইতিহাসে আর কখনও এভাবে অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন বা উপনির্বাচন বন্ধ হয়েছে বলে জানা নেই। এখন যদি অনিয়মের দায়ে সেখানকার নির্বাচন কর্মকর্তাদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত হয়, সেটাও হবে দৃষ্টান্তমূলক। যদিও যত সহজে উপনির্বাচনটি বন্ধ করা গেছে; দোষী কর্মকর্তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা ততটা সহজ হবে না। পূর্বসূরি দুই কমিশন যেভাবে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাঠ প্রশাসনের খেয়ালখুশির বিষয়ে পরিণত করেছে; তা মনে থাকলে শেষোক্ত পর্যবেক্ষণটি উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।