কৃষি খাতে (শস্য উপখাত, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য উপখাত এবং বন উপখাত নিয়ে গঠিত) প্রবৃদ্ধি হার ক্রমাগত নিম্নমুখী হওয়ার প্রভাব পড়েছে শস্য উপখাতের, বিশেষ করে উপখাতটির প্রধান ফসল এবং আমাদের প্রধান খাদ্য চাল উৎপাদনের ওপর।
এবার বোরো ও আউশ ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। বোরো মৌসুমে হাওড়াঞ্চলে তিন দফা বন্যার কারণে বিপুল পরিমাণ ফসলের ক্ষতি হয়। জুনে উপকূল ও উত্তরাঞ্চলে হঠাৎ অতিবৃষ্টির কারণেও মাঠে পাকা ফসল নষ্ট হয়। প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক, বোরোতে লক্ষ্যমাত্রার (২.৯ কোটি টন) চেয়ে ১৩ লাখ টম ফলন কম হয়েছে। বন্যার কারণে আউশ উৎপাদন কম হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২৭ লাখ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আউশের উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫০ হাজার টনে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সাড়ে ছয় লাখ টন কম উৎপাদন হয়েছে। বোরো ও আউশের উৎপাদন কম হওয়ায় এবং যথাসময়ে প্রয়োজনীয় চাল আমদানি না হওয়ায় দেশে দেখা দিয়েছে চাল সংকট। দেশের বাজারে সব শ্রেণির চালের দাম অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে।
দীর্ঘ খরা ও অপ্রতুল বৃষ্টিপাতের কারণে চলতি মৌসুমে আমনের ফলন লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কম হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে আগামী দিনে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ সংকট যথাসম্ভব এড়াতে আমাদের সব দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে আসন্ন বোরোতে, যা দেশে চাল উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে। আগামী মৌসুমে বোরোর এযাবৎকালের সর্বোচ্চ উৎপাদনকে পেছনে ফেলতে আমাদের কী করা দরকার, তা আলোচনা করাই এ নিবন্ধের উদ্দেশ্য।