সব নির্বাচনই যেমন কোনো না কোনো বার্তা দিয়ে যায়; তেমনই রাজনীতিতেও লাভ-ক্ষতি হিসাবের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দেয়। রাজনীতির লাভ-ক্ষতির হিসাবটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কারও বিজয়ী বা পরাজিত হওয়া থেকে আলাদা। যেমন আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে যে প্রশ্নগুলো ঘুরপাক খাচ্ছিল, গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন তার অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে নতুন কিছু প্রশ্নও হাজির করছে। ইভিএম, নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা ইত্যাদি অমীমাংসিত বিষয়ের উত্তর সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে নতুন করে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৫০ শতাংশ আসনে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। গাইবান্ধা উপনির্বাচন যে বাস্তবতাটি উন্মোচন করল তা হচ্ছে- ইভিএমে যান্ত্রিক কারচুপি ছাড়াও বড় বিষয় হলো, যন্ত্রটিকে যথাযথভাবে পাহারা দেওয়া। বিষয়টি যে নির্বাচন কমিশনের জানা ছিল না, তা নয়। গত ৩০ মে ইভিএম নিয়ে আলোচনায় নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবীব বলেছিলেন, 'ইভিএমের মধ্যে চ্যালেঞ্জ একটাই; আর কোনো চ্যালেঞ্জ আমি দেখি না। সেটা হচ্ছে ডাকাত; সন্ত্রাসী গোপন কক্ষে একজন করে দাঁড়িয়ে থাকে।' তাহলে এর প্রতিকারে গাইবান্ধায় নির্বাচন কমিশন কী ব্যবস্থা নিয়েছিল? নির্বাচনের মাঝপথে সিইসি পরিস্থিতি 'নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে' বলে নির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করলেন। তিনি বললেন, বুথে ডাকাত ঢুকে আছে। ইভিএম নির্ভুল ও আদর্শ একটি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র হলেও বুথ ডাকাতদের হাত থেকে একে রক্ষা করার দায়িত্ব কার?