বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বড় সমস্যা-চ্যালেঞ্জ হিসাবে বিবেচ্য। মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নির্দয় প্রভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত-অনিশ্চয়তায় বিশ্বব্যাপী খাদ্যদ্রব্যের উচ্চমূল্যের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। জুনে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বৈশ্বিক মহামন্দার কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বৃদ্ধির সতর্কবার্তা দিয়েছে। একই সঙ্গে মন্তব্য ছিল-বিশ্ব দুর্বল প্রবৃদ্ধি এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির একটি প্রলম্বিত সময়ের মধ্যে প্রবেশ করেছে।
ওই প্রতিবেদনে সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেছেন, ‘মুদ্রাস্ফীতির বিপদ আজ উল্লেখযোগ্য। বিশ্বের বেশির ভাগ অংশে দুর্বল বিনিয়োগের কারণে প্রশমিত প্রবৃদ্ধি সম্ভবত পুরো দশকজুড়ে অব্যাহত থাকবে। মুদ্রাস্ফীতি এখন বহুদেশে, বহু-দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং সরবরাহ খুব ধীরগতিতে বাড়ছে।
তবে সবচেয়ে মারাত্মক ঝুঁকি যেটি, তা হলো মুদ্রাস্ফীতি দীর্ঘ সময়জুড়ে অব্যাহত থাকতে পারে।’ ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রায় সব শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোয় বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার বাড়তি। সব দেশই উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলার পন্থা উদ্ভাবনে ব্যতিব্যস্ত। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে প্রধান সমস্যা বিবেচনায় বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো নীতি সুদহার বৃদ্ধি করছে। কিন্তু অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বিশ্বব্যাপী প্রচলিত ধারণা ইতোমধ্যে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। নীতি সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সামান্যতম সাফল্য লাভের বিপরীতে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
অতিসম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ওয়েবসাইটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান অর্থনীতিবিদদের নিয়ে পরিচালিত জরিপ ‘ইকোনমিস্ট আউটলুক’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিশ্ব মন্দার আশঙ্কা করা হয়েছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭৩ শতাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করেন, ২০২৩ সালে মন্দা হতে পারে।