জাতীয় প্রশ্নে মুজিবের জাতীয়তাবাদী সমাধান

দেশ রূপান্তর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২২, ১২:০২

রাজনীতিতে শেখ মুজিব দুজনকে অগ্রপথিক ও পথনির্দেশক হিসেবে পেয়েছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে। শুরুতে এরাও জাতীয়তাবাদী নেতাই ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। পরে তারা পৃথক হয়ে যান। এবং সেটা ঘটে ওই জাতীয়তাবাদের প্রশ্নেই। সোহরাওয়ার্দী শুরুতে যেমন শেষ পর্যন্তও তেমনি পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদীই ছিলেন; ভাসানী যা ছিলেন না। ভাসানী বাঙালি জাতীয়তাবাদী হয়ে উঠেছিলেন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই। মুজিবও তাই। তবে সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে মুজিবের বিচ্ছেদ ঘটেনি, বিচ্ছেদ বরং ঘটেছে ভাসানীর সঙ্গেই; সেই ১৯৫৭ সালে, ভাসানী যখন ন্যাপ গঠনের উদ্যোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ ছেড়ে বের হয়ে যান তখন। এর কারণ জাতীয়তাবাদী সংগ্রামকে ভাসানী সমাজতন্ত্রমুখী করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন; মুজিব অতটা যেতে প্রস্তুত ছিলেন না। সমাজতন্ত্র ছাড়া যে উপায় নেই, এটা তিনি জানতেন, এবং মানতেনও; কিন্তু তার পক্ষে কমিউনিস্ট হওয়া, এমনকি কমিউনিস্টদের সহযাত্রী হওয়া সম্ভব ছিল না, যেটা তিনি নিজেও বলেছেন। আগে বলেছেন সমবয়সী রাজনীতিকদের, স্বাধীনতার পরে বলেছেন সমাজতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান-নিতে-উদ্যত তার অনুসারীদের।


কিন্তু সাতচল্লিশের সেই মর্মান্তিক দেশভাগের পরপরই তার চিন্তা চলে গিয়েছিল পূর্ববঙ্গকে স্বাধীন করার দিকে। ঘটনা ও অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে এটা তার কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল যে, পাকিস্তানের শাসন হচ্ছে ঔপনিবেশিক, এবং সেখান থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে বাঙালির মুক্তি নাই। ১৯৬৬-তে ছয় দফার পক্ষে যখন তিনি একের পর এক জনসভা করছিলেন, তখন তার শেষ বক্তৃতাটি তিনি দেন নারায়ণগঞ্জে। সভা শেষে ঢাকায় ফিরে গভীর রাতে বন্দি হন। সেই সভাতে পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরিত্র বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘পশ্চিম পাকিস্তানি অবাঙালি পুঁজিপতিরা ধর্মের নামে পূর্ববাংলার জনগণকে শোষণ করছে।’ এ বিষয়ে সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে তার মতপার্থক্য ছিল, বিরোধই বলা চলে। এই বিরোধের মীমাংসা যে সম্ভব ছিল এমন নয়। আইয়ুবের সামরিক শাসন যখন রাজনৈতিক দলের জন্য কাজের ব্যাপারে কিছুটা ছাড় দেয় তখন থেকেই শেখ মুজিবের আগ্রহ ছিল আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করার। সোহরাওয়ার্দী সেটা চাইছিলেন না। এ ক্ষেত্রেও মতপার্থক্য দেখা দিয়েছিল। সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পরপরই বাঙালি জাতীয়তাবাদের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ এবং দলের পুনরুজ্জীবনউভয় ক্ষেত্রেই মুজিব খুব দ্রুত এগিয়ে যান। সোহরাওয়ার্দী যদি আরও দীর্ঘজীবী হতেন তাহলে মুজিব কি বাঙালি জাতীয়তাবাদের পক্ষে যে অবস্থান নিয়েছিলেন সেটা নিতে পারতেন? আমাদের ধারণা পারতেন; কারণ তার রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল জাতি প্রশ্নের মীমাংসা; তার পক্ষে সেটাকে বাদ দেওয়া সম্ভব ছিল না। এমনকি দলের পুনরুজ্জীবনের ব্যাপারেও সোহরাওয়ার্দী তাকে থামিয়ে রাখতে পারতেন বলে মনে হয় না। ব্যক্তিগত সম্পর্ক যতই গভীর হোক না কেন, রাজনীতির মুজিব যে তার ওই নেতাকে ছাপিয়ে উঠবেন এটা অনিবার্য ছিল।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us