মাত্র তিন সপ্তাহের কিছু বেশি সময় আগে ব্রিটেনের চ্যান্সেলর বা অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ারতেং এক সংবাদ সম্মেলনে বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন, তাঁর হাতে ব্রিটেনের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জাদু আছে। তখন পাশে বসে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস সমালোচকদের, বিশেষ করে যাঁরা বলেছিলেন, বিশাল কর ছাড়ের জন্য সরকারকে প্রচুর ধার করতে হবে এবং পরিণামে কাঁদতে হবে; ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে এক হাত নিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই বাজার হয়ে পড়ল স্থবির। তা দেখে জনগণ হলো আতঙ্কিত। আর পরিস্থিতি সামাল দিয়ে নিজের চামড়া বাঁচাতে ট্রাস প্রিয় বন্ধুকে মন্ত্রিসভা থেকে ছেঁটে ফেললেন।
আমার মনে হয়, ট্রাস ভেবেছিলেন, কোয়ারতেংকে ছাঁটাই করে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে আরও কিছুদিন থাকতে পারবেন। বাস্তবে তাঁকে এখন অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাঁর দলের সংসদ সদস্যরা তাঁকে সরানোর বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেন তা দেখার জন্য। কোয়ারতেংকে বহিস্কারের পর ট্রাস সংবাদ সম্মেলন করে কোয়ারতেং প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনাও বাদ দেওয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু সেখানে তিনি ওই পরিকল্পনা জনমনে যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল তা স্বীকার না করে বা তার জন্য ক্ষমা না চেয়ে বরং কোয়ারতেংয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এ জন্য তিনি আরও বিপদে পড়েছেন বলে মনে হচ্ছে। কোয়ারতেং কিন্তু নিজের কোনো ভুলের জন্য বহিস্কৃত হননি। তিনি বরং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ট্রাস যেমনটা চেয়েছিলেন, তা-ই করছিলেন। কোয়ারতেংয়ের পদত্যাগপত্র দেখলেও বিষয়টা আঁচ করা যায়। হয়তো পরিস্থিতি একটু থিতিয়ে আসার পর কোয়ারতেং নিজের কথা বলবেন। তখন দেখা যাবে, তাঁর ব্রিটেনে দ্বিতীয় স্বল্পতম সময়ের অর্থমন্ত্রী বা চ্যান্সেলর হওয়ার দায় আসলে কার। কনজারভেটিভ পার্টির (টোরি) সাবেক এক মন্ত্রী বলেছেন, কোয়ারতেং যদি মুখ খোলেন তাহলে ট্রাস অস্তিত্ব সংকটে পড়বেন।