মানসিকভাবে আমার গৃহকর্ত্রীর কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি বিশেষ পক্ষপাতিত্ব নেই। তবে তিনি রাজনীতি সচেতন। পারিবারিকভাবে আমাদের দুই পরিবারেরই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করে চলার চেষ্টা শৈশব থেকেই। তাই বলে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া বর্তমান আওয়ামী লীগের প্রতি বিশেষ পক্ষপাতিত্ব রয়েছে, তেমনও নয়। তবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি ভালোবাসার বদলে পাকিস্তানপন্থিদের সঙ্গে সখ্য থাকায় তিনি বিএনপির প্রতি আস্থাশীল নন। এখানে এমন পরিচয় পর্বটি রাখতে হলো মূল গল্পটি শুরু করার জন্য।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিমপাশে আধা গ্রামীণ অঞ্চলে আমার বসবাস। বাসায় এক তরুণী গৃহকর্মী রয়েছে। নাহার তার নাম। গ্রামের অতিসাধারণ এক মেয়ে। রাজনীতি বোঝার কথা নয়। রাজনীতি অঞ্চলের পক্ষ-বিপক্ষের খবর তার কাছে নেই। নতুন ভোটার হয়েছে সে। দুই দিন আগে কাছ থেকে শুনছিলাম নাহারের সঙ্গে আমার স্ত্রী অর্থাৎ তার ‘আন্টি’র কথোপকথন। নাহার ক্ষুব্ধতার সঙ্গে জানাল, সে আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে না। তার আন্টি জানতে চাইলেন, কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে। নাহারের উত্তরে মনে হলো, মাত্র দুটি কারণে সে আওয়ামী লীগকে বর্জন করেছে। মেয়েটি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বোঝে না। বিশ্বমন্দা সম্পর্কেও তার ধারণা নেই। তার জগৎ প্রতিদিনের জীবনযুদ্ধ নিয়ে। প্রথমত, নিত্যপণ্যের দাম এত বেড়েছে যে, মা-বাবাকে নিয়ে তার চলা কঠিন হয়ে পড়েছে।