কতশত ঘটনা-অঘটন, কত জোটের বৈঠক-সভা, কত কর্মপরিকল্পনা-তবু কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছে না। থামছে না আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। থামছে না গুলি-বোমা, যুদ্ধ। থামানো যাচ্ছে না অকাল মৃত্যু ও হাজারো মায়ের অঝোর অশ্রুধারা। তার ওপর ভয় দেখানো হচ্ছে রাশিয়ান ‘বিগ বয়ের’ আরেক ‘লিটল বয়’ ছুড়ে ইউক্রেনকে তামা বানিয়ে সবাইকে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়ার আক্রোশ। ইউক্রেনের মাটিতে হিরোশিমা ও নাগাসাকির পুনরাবৃত্তি হলে বিগ বয় পুতিনের পারমাণবিক যুদ্ধের খায়েশ মিটতে পারে কিন্তু ইতিহাস তার কপালে যে অবিরত ঘৃণার কালিমা লেপ্টে দেবে সেদিকে তার কি কোনো হিতাহিত জ্ঞান আছে?
গত কয়েক মাস থেকে চারদিকে বিশ্বমন্দার অশনি সংকেত শোনা যাচ্ছে। বড় বড় জাতিগ্রুপ যারা কখনই মনে করেন না যে তাদের দেশে অর্থনৈতিক বা অন্য যে কোনো আকাল লাগতে পারে-তারাই সর্বাগ্রে বেশি উদগ্রীব হয়ে বিপদের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। কোনো পরিবারে সমস্যা হলে অভিভাবকরা সাধারণত ছোট বাচ্চাদের সেটাকে বুঝতে দেয় না। কিন্তু বিশ্ব পরিবারে মন্দা-সমস্যা শুরু হওয়ার আগেই বিশ্ব মোড়লরা হতাশ হয়ে পড়েছে। তারা ছোট-বড় সবাইকে ডেকে এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় সতর্ক করার নামে আরও হতাশার বাণী শুনিয়ে কাবু করে দিচ্ছে।
তারা হয়তো জানে না যে, অনেক দেশ বা জাতি তাদের চেয়ে অনেক কিছুতে ছোট হলেও মনের সাহসে তাদের চেয়ে বেশি বলীয়ান। তাদের নিজেদের অনেক সমস্যা, অভাব, দুর্যোগ থাকলেও সেগুলোর ভয়ে কখনো বেশি কাতর হয়ে পড়ে না। যেমন- করোনার আক্রমণে তারা নিজেরাই আতঙ্কে ও মৃত্যুসংখ্যায় বেশি কাবু হয়ে গেলেও অনেক দরিদ্র-অভাবী দেশের মানুষ সেটাকে তেমন পাত্তা দেয়নি। বরং উন্নত দেশেগুলোর তুলনায় বেশি দক্ষতা ও সাহসের সাথে করোনার বৈশ্বিক আগ্রাসনকে মোকাবিলা করতে পেরেছে।
বর্তমানে বিশ্বমন্দার বিপদ সংকেত তাদের কারণে তৈরি হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধ আসলে জেলেনস্কির সাথে পুতিনের যুদ্ধ নয়। এটা জি-৭ এর সাথে পুতিনের যুদ্ধ। যুদ্ধবিশারদরা মনে করেন, ইউক্রেনের সাথে রাশিয়ার যুদ্ধ কোনো কারণে লেগে গেলেও সেটা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার মূল কারণ পেছনের বহিঃশক্তিগুলোর শ্যাডো কৌশলে যুদ্ধের মাঠ দখলে নেওয়া।